Home VIDEO ঝাড়ু বিক্রি করেই চলছে জীবিকা, উন্নয়নের দাবিতে ব্রাত্য জনজাতিরা

ঝাড়ু বিক্রি করেই চলছে জীবিকা, উন্নয়নের দাবিতে ব্রাত্য জনজাতিরা

by News On Time Tripura
0 comment
তেলিয়ামুড়া

তেলিয়ামুড়াঃ

ভোট আসে ভোট যায়, কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার জুমিয়াদের ভাগ্যের চাকা একই জায়গায় স্থিমিত। তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না। তাদের ক্ষেত্রে কেন এমনটা? বছরের পর বছর ধরে উন্মুক্ত খোলা আকাশের নিচে বসে জুমের ফসল কিংবা প্রাকৃতিক সম্পদ ফুল ঝাড়ু বিক্রি করতে হয়। ওইসব জুমিয়াদের জন্য প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে বর্তমানেও শেড ঘর নির্মাণ করা হয়নি তাদের সামগ্রী এনে বসে বিক্রি করার জন্য। ওইসব বিষয়গুলি জুমিয়াদের মনে কুড়েঁ কুড়েঁ খাচ্ছে। যে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা উপজাতি দরদী স্লোগান এবং উন্নয়নের ডালিকে সামনে রেখে লম্বা চওড়া ভাষণ দেয়। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে কতটা উন্নয়ন হয়েছে! তাদের ক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক দলই খবরাখবর রাখে না।
কথা হচ্ছিল জনৈক জুমিয়া অর্থাৎ আঠারোমুড়া পাহাড়ের বুক চিরে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের পাশে বসে জুমিয়ারা ফুল ঝাড়ু বিক্রিকে কেন্দ্র করে। তারা প্রতিটি ফুল ঝাড়ু ৪০-৫০ টাকা ধরে বিক্রি করছে। পূর্বের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে দাম। কারণ পাহাড়ের জঙ্গলাকীর্ণ এলাকা গুলোতে পূর্বের মতো ফুল ঝাড়ু আর সেই রকম পাওয়া যায় না। প্রত্যন্ত এলাকার জুমিয়ারা বহু দূর দুরান্ত থেকে ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করতে হয়। এর কারণেই ফুল ঝাড়ু বর্তমানে বাজার গুলিতে চড়া দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। আরো জানা গেছে, মূলত ফাল্গুন চৈত্র মাস এই দুটি মাস জুমিয়া পরিবার গুলির মধ্যে সংসারের ভরণপোষণে খুবই সংকট দেখা দেয়। এই সংকট মোচনের জন্য ফাল্গুন এবং চৈত্র এই দুটি মাসে জঙ্গল থেকে ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করে এনে বিক্রি করে তারা। আর সেই উপার্জনের অর্থ দিয়ে তাদের সংসারের ভরণপোষণের সংকট মোচন করে।
উল্লেখ থাকে বিগত ২০০৩ সালে বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে তৎকালীন বাম মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার দুধ সাদা পাঞ্জাবি পড়ে মুঙ্গিয়াকামি ব্লকের ১৮ মুড়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ৪৩ মাইল এলাকায় একটি মার্কেট শেড তৈরি করে দেওয়া হবে বলে উপজাতি জনগণদের সামনে ঘোষণা করেছিলেন। যেই মার্কেট শেডে জুমিয়া পরিবার গুলি জুমের উৎপাদিত ফসল বসে বিক্রি করবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো দিনকাল পেরিয়ে গেলেও ৪৩ মাইল এলাকায় জুমিয়েদের জন্য কোন সেড ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়নি। এরপর থেকেই জুমিয়া পরিবার গুলি ধীরে ধীরে বামেদের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ছিল।
এবারও অর্থাৎ ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়ে জনগণের রায় ইভিএম বন্দী হয়ে বর্তমানে স্টং রুমের সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। আগামী ২রা মার্চ ভোটের ফল প্রকাশের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাবে রাজ্যে কে সরকার গঠন করবে। সে সরকার জুমিয়াদের সমস্যাগুলি দূরীকরণে কতটুকু সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

You may also like