কদমতলাঃ সরকারি স্টল বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ ও গ্রাম প্রধানের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে বাজার ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ। সুষ্ঠভাবে স্টল বন্টনের দাবিতে সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও পঞ্চায়েত সচিবের নিকট ডেপুটেশন।প্রতিবাদে সামিল হওয়াতে থানায় মামলা পড়লো বিজেপি দলের বিজীত প্রার্থী দিলীপ তাঁতীর নামে।ঘটনা উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা বাজারে।ঘটনার বিবরণে প্রকাশ,সরকারি অর্থ খরচ করে কদমতলা বাজারে সব্জি ব্যবসায়ীদের জন্য বারোটি স্টল নির্মাণ করেছিল কদমতলা পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ। কিন্তু সেই স্টল গুলি অর্থের বিনিময়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বন্টনের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার দুপুরে কদমতলা বাজার ব্যাবসায়ীরা বিকল্প জাতীয় সড়কের কদমতলা সব্জি বাজারের সামনে রাজপথে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বসেন।পরে কদমতলা ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও কদমতলা থানার মধ্যস্হতায় বিষয়টি দেখে দেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার হয়। কিন্তু পথ অবরোধের পর বাজার ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে এক বৈঠকে মিলিত হন।সেই বৈঠকে কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি দলের বিজীত প্রার্থী দিলীপ তাঁতী উপস্থিত হয়ে তাদের সর্বোপরি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।আর এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বারোটি স্টল সঠিক ভাবে বন্টনের দাবিতে বাজার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে শুক্রবার সকালে কদমতলা ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও কদমতলা পঞ্চায়েত সচিবের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করা হবে।সেই মর্মে বাজার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে শুক্রবার পৃথক দুটি ডেপুটেশন প্রদান করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবাদকারী বাজার ব্যবসায়ীদের মাঝে বাজার সভাপতি সুভাষ পাল,সম্পাদক বিভু নাথ,সব্জি বাজারের সম্পাদক উত্তম দাস ও কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি দলের বিজীত প্রার্থী দিলীপ তাঁতীর নামে কদমতলা থানায় দোকানপাটে হামলার অভিযোগে মামলা করে বসেন নরেন্দ্র নাথ ওরফে বাপ্পন ও পরেন্দ্র নাথ ওরফে আবু নামের দুই ব্যক্তি। পরবর্তীতে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও মারমুখী আচরনের অভিযোগ তুলে শুক্রবার কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিক্রমজিৎ নাথ ওরফে বিক্রম,নরেন্দ্র নাথ ওরফে বাপ্পন ও পরেন্দ্র নাথ ওরফে আবুর নামে স্হানীয় থানায় মামলা করেন সব্জি বাজারের সম্পাদক উত্তম দাস। থানার ওসি সুবীর মালাকার পৃথক দুটি মামলা হাতে নিয়ে তদন্তে নেমেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে বিজেপি দলের বিজীত প্রার্থী দিলীপ তাঁতী জানান, বাজার ব্যবসায়ী তাঁর কাছে লিখিত ভাবে স্টল বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছিলেন।তাই তিনি বাজার বাসীর স্বার্থে এগিয়ে এসেছেন। তারপর তিনি স্টল বন্টনের বিষয়ে কদমতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সুব্রত দেবকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান,এব্যপারে তিনি কিছু জানেন না। সবকিছু গ্রাম প্রধান বিক্রমজিৎ নাথ ওরফে বিক্রম জানে।তাই তিনি গ্রাম প্রধানকে জিজ্ঞেস করলে প্রধান তাঁকে জানান”এটা তুমাকে জানিয়ে কি হবে”।এক কথায় গ্রাম প্রধান তাঁকে পাত্তাই দেননি বলে তার বক্তব্য। অবশ্য এর পূর্বেও কদমতলা বাজারে সরকারি স্টল ঘর বন্টনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছিল গ্রাম প্রধানের বিরুদ্ধে। কিন্তু গ্রাম প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কি অদৃশ্য শক্তির কারনে সে বারংবার পার পেয়ে যায় তা নিয়ে কদমতলা বাসীর মনে প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে। অপরদিকে বাজার ব্যবসায়ীরা ডেপুটেশনে শেষে এক সাক্ষাৎকারে বলেন,ধর্মনগর মহকুমার ধর্মনগর শহরের বাজারের পর কদমতলা বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় পড়ে।মঙ্গল ও শুক্রবার হাটবার থাকলেও সপ্তাহের প্রতিবারেই জমজমাট হাট বসে।আর কদমতলা বাজারের ৫০/৬০ জন সব্জি ব্যাবসায়ী রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে বসে দোকানদারি করতে হয়।তাই ব্যাবসায়ীদের স্বার্থে সরকারি অর্থ খরচ করে বারোটি স্টল নির্মাণ করা হয়। বাজার ব্যাবসায়ীদের দাবি ছিল সরকারি স্টল সঠিক ভাবে বন্টনের। কিন্তু চলতি মাসের ১৬ তারিখ কদমতলা পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ ও গ্রাম প্রধান চুপি সারে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ঐ বারোটি সরকারি স্টল ঘর অবৈধভাবে বন্টন করে নেয়।তাই সেই স্টল ঘর গুলি সঠিক ভাবে বন্টনের দাবিতেই তাদের প্রতিবাদ।তবে তারা আশাবাদী শুক্র ও শনিবারের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সঠিক ভাবে বন্টনের উদ্যোগ গ্রহন করবে। অন্যথায় আগামী সোমবার থেকে কদমতলা বাজারের সকল ব্যাবসায়ীগন বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন।