বিশালগড়ঃ বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের একমাত্র গাইনোকোলজিস্ট ডা: দেবজিত দেবনাথ এর চূড়ান্ত কর্তব্য গাফিলতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নড়েচড়ে বসে গোটা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সহ প্রশাসন। জানা গেছে সোমবার সকালে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসেন মানিক্য নগরের ঝুমুর দেবনাথ নামের এক রোগী। রক্ত স্বল্পতার কারণে ঝুমুর দেবনাথকে এদিন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কথা ছিলো সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তাকে রক্ত দেওয়া হবে। কিন্তু বিকেল প্রায় চারটা নাগাদ তাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, রক্ততের ব্যাগ শরীরে চাপিয়ে দিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক হাসপাতাল ছেড়ে নিজের প্রাইভেট চেম্বার করার জন্য বেরিয়ে যান। নিয়ম হচ্ছে যদি কোনও রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া হয়, তাহলে চিকিৎসককে অবশ্যই তা শেষ করা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কাছাকাছি না থাকলেও হাসপাতাল চত্বরে তো অবশ্যই থাকতে হবে। অথচ এদিন ঝুমুর দেবীকে রক্ত চাপিয়ে দিয়ে চিকিৎসক ডাঃ দেবজিত দেবনাথ আর হাসপাতালে অপেক্ষা করেননি। তিনি এই হাসপাতালে একমাত্র গাইনোকোলজিস্ট, তাই অন্য কেউ উনার স্থলাভিসিক্ত হওয়ারও কোনো সুবিধা নেই। যদিও এই ধরনের কর্তব্যে গাফিলতির ঘটনা বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতিদিন এই হাসপাতালে বিকেল তিনটা-চারটার পর একই পরিস্থিতি চলতে থাকে। এই ঘটনা চাউর হতেই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। মঙ্গলবার বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে এক প্রশাসনিক বৈঠক বসে। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুশান্ত দেব, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: দেবাশীষ দাস, বিশালগড় মহকুমা শাসক রাকেশ চক্রবর্তী, মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: জ্যোতির্ময় দাস সহ অন্যান্যরা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিদ্যুৎ চপলতা সহ অন্যান্য অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ টেনে ঘটনার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে বিধায়ক সুশান্ত দেব এই ঘটনায় দপ্তরের তরফে তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, সোমবার বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা স্বাস্থ্য দফতরের জন্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। এখন দেখার রাজ্যের চিকিৎসক মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানকে বৃদ্ধঙ্গুষ্ট দেখানো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দপ্তর ঠিক কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।