কাঠালতলীঃ
গত দুইদিন পূর্বে পাচার বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও জনতার মারপিটে উত্তপ্ত ছিল ত্রিপুর-অসম ও অসম-ত্রিপুরা সীমান্তের ঝেরঝেরি ও কাঁঠালতলি এলাকা। বর্তমানে দুই রাজ্যের এই সীমান্ত এলাকায় অশান্তি বিরাজ করছে। থমথমে রয়েছে গোটা পরিস্থিতি। উল্লেখ্য,গত শুক্রবার রাত আনুমানিক আড়াইটা নাগাদ অসমের কাঁঠালতলি হয়ে ঝেরঝেরি পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে একটি মিনি লরি সেগুন কাঠ নিয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সুত্রপাত।এনিয়ে শনিবার সকালে কাঁঠালতলির বাসিন্দা কামরান পাশা কিছু লোকজন নিয়ে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।তখন দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা সংঘর্ষ বাঁধে।এতে অল্পবিস্তর আহত হন উভয় পক্ষের কয়েকজন সহ কাঁঠালতলির দুই সংবাদ কর্মী।পরে অভিযোগের ভিত্তিতে কাঁঠালতলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশীষ মোহন্ত স্টাফ নিয়ে বিনা অনুমতিতে ত্রিপুরার ঝেরঝেরি এলাকায় বলপুর্বক প্রবেশ করে বদরুল হক নামের এক ব্যক্তির পিছু দাওয়া করে তাকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ।পরিস্থিতি তখন আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে।বদরুলকে মারপিটের হাত থেকে রক্ষা করতে তার আত্মীয় পরিজনরা ছুটে গেলে অসম পুলিশের সাথে দস্তা দস্তিতে আক্রান্ত হন কাঁঠালতলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশীষ মোহন্ত।বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শনিবার দিনভর চলে উত্তেজনা।কয়েক ঘন্টার জন্যে রাস্তা অবরোধও করেন কামরান পাশা সহ স্হানীয়রা।পরে বিষয়টি উভয় রাজ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের গোচরে গেলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।জানা গেছে ত্রিপুরার কদমতলা থানা এবং অসমের বাজারিছড়া থানায় মামলা পাল্টা মামলা রজু করা হয়েছে।এমর্মে রবিবার ঝেরঝেরি স্থিত নাকা পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হোন ত্রিপুরা ঝেরঝেরি -কুর্তি এলাকার জনগণ।তাদের দাবি,শুক্রবার রাত আড়াইটার সময় যদি কোন অবৈধ গাড়ি ত্রিপুরায় প্রবেশ করে থাকে তাহলে সেটা উভয় রাজ্যের পুলিশ দেখবে।কিন্তু এত রাতে কাঁঠালতলির বাসিন্দা তথা প্রাক্তন জিপি প্রেসিডেন্ট কামরান পাশা সেখানে কি করছিলেন।অভিযোগ,তিনি এসে ত্রিপুরা পুলিশ সহ স্হানীয়দের উত্তপ্ত করে গাড়িটি পাচার করেছেন।তাছাড়া কাঁঠালতলি এলাকার একাংশ লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে বদরুলের উপর বিষয়টি চাপিয়ে দেওয়ার মতলবে ছিলেন।তার কারণেই নাকি এতটুকু জল গড়ায় বিষয়টি এমনটাই দাবি প্রতিবাদকারীদের।অপরদিকে প্রতিবাদকরীরা এও দাবি করেন যে,কামরান পাশার হুকুমে কাঁঠালতলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশীষ মোহন্ত দলবল নিয়ে কিভাবে ত্রিপুরার প্রবেশ করে বদরুল সহ তার নিকট আত্মীয় ও দুই মহিলাকে মারপিট সহ হেনস্তা করলো। তাছাড়া ত্রিপুরা পুলিশের কি কোন অনুমতি ছিল তা তাদের জানা নেই।তবে অসম পুলিশের ভুমিকা নিয়ে তারা সন্দেহ প্রকাশ করলেও ভিড়ের মধ্যে ইনচার্জ আশীষ মোহন্ত কিছুটা আক্রান্ত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তারা।পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সীমান্ত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক পুলিশ প্রশাসন সহ উভয় সীমান্তের সচেতন জনগণ।এদিকে আক্রান্ত দুই মহিলাও সুষ্ঠু তদন্তক্রমে ঘটনার সুবিচারের দাবী তুলেছেন।অপরদিকে ঝেরঝেরি এলাকার বুদ্ধিজীবী সচেতন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি উভয় রাজ্য সীমান্তের জনগণের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন,এলাকায় শান্তি বজায় রেখে পুনরায় উভয় রাজ্যের মানুষের মেলবন্ধন গড়ে উঠুক,এতে সম্পূর্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন ঝেরঝেরি-কুর্তি এলাকার স্থানীয় লোকজন।তবে পুলিশি তদন্তে কি বেরিয়ে আসে সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।