
ডেস্ক রিপোর্ট:
ছিঃ ছিঃ রে ননী ছিঃ…২০ বছর পর কীভাবে ভাইরাল এক ওড়িয়া গান, ১.২ কোটির রেকর্ড
•আসলে এই গানের শুরু সম্বলপুর থেকে। এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে ওড়িশা পেরিয়ে গোটা দুনিয়ায়। নতুন বছরের শুরুতেই ‘ছি ছি ছিঁড়ে ননী…’ গানটি যেন এক জাদু ছড়িয়েছে। ইউটিউবে গানটির ভিউ ছাড়িয়েছে ১২ মিলিয়ন গণ্ডি! সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এক লাখের বেশি ব্যবহারকারী এই গানের উপর শর্ট ক্লিপ তৈরি করেছেন।
বাংলা মানে:-
ধন কে দেখলু তুই ননী সিনা মনকে চিনলু নাই।
বাংলা: ধন (সম্পদ) দেখলি মেয়ে কিন্তু মনকে চিনলি না।
সোনাকে চিনলু বানাকে চিনলু মনিষো চিনলু নাই।
বাংলা: সোনাদানা চিনলি কিন্তু মানুষ চিনলি না।
ধন নাই বলি মোর পাখে ননী তার কাজে উঠি গলু।
বাংলা: আমার কাছে ধন (সম্পদ) নেই বলে,,মেয়ে তার সঙ্গে চলে গেলি।
ধন আছে সিনা মন নাই তাকে তুই জানি না পারিলু।
বাংলা: ধন সম্পদ আছে কিন্তু মন নেই তার,তুই জানতে পারলি নাহি।
গোটে দিনো মিশা যগি দেলু নাহি কেড়ে কথা করি দেলু।
বাংলা: একটা দিন ও অপেক্ষা করলি নাহি,কতো বড়ো কান্ড করে দিলি
মুই গাঁ যাই করি আসলা বেলে কেন্তা পাছরি দেলু।
বাংলা: আমি বেড়াতে গিয়ে এসে দখি আমায় কেমনে ভুলে গেলি।
ছি ছি ছি ননী ছি ছি ছি।
বাংলা: ছি ছি ছি মেয়ে ছি ছি ছি
•গানের প্রযোজক তথা রচয়িতা সীতারাম আগরওয়াল এর কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রয়াত গায়ক ও গীতিকার সত্যনারায়ণ অধিকারীকে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড করছেন ভিডিওর মুখ্য চরিত্র সম্বলপুরের বিভূতি বিশ্বাল এবং পরিচালক মনভঞ্জন নায়ক।
•গোবিন্দটোলা, সম্বলপুরের বাসিন্দা বিভূতি বিশ্বাল একজন নিবেদিতপ্রাণ মঞ্চশিল্পী। থিয়েটারে তাঁর দক্ষতা, প্রধান এবং পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যেই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। আকাশবাণী সম্বলপুরের সঙ্গে যুক্ত এই শিল্পী পার্ট-টাইম আর্ট টিচার হিসেবেও কাজ করেন।
•গানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার স্মৃতি রোমন্থন করে বিভূতি জানিয়েছেন, পরিচালক মনভঞ্জন নায়কের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল এক থিয়েটারের মাধ্যমে। বিভূতির গ্রাম্য চেহারা এবং সহজাত অভিনয় দক্ষতা দেখে পরিচালক তাঁকে এই মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। যদিও এর আগে কখনও মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় বা নাচ করেননি তিনি, তবুও নির্মাতারা তাঁর উপর ভরসা করেছিলেন।
•পরিচালক মনভঞ্জন নায়ক জানিয়েছেন, গানটি প্রথম বার রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। ২০০৫ সালে প্রযোজক সীতারাম আগরওয়াল এই গানের উপর একটি ভিডিও তৈরি করার প্রস্তাব দেন। তখনই এই গল্পটি তৈরি করেন নায়ক। গল্পটি এক দরিদ্র যুবককে ঘিরে, যাঁকে প্রেমিকার পরিবার আর্থিক অবস্থার কারণে প্রত্যাখ্যান করে। কাজের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া যুবক যখন ফেরে, তখন জানতে পারে প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সেই হৃদয়বিদারক মুহূর্তে গানটি গেয়ে ওঠে যুবক।
পরিচালক মনভঞ্জন স্বীকার করেছেন, গানটির মান নিয়ে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী থাকলেও এর এমন সাড়া জাগানো সাফল্য হবে তা কল্পনাও করতে পারেননি। ২০ বছর পর এই গানের পুনর্জন্ম যেন সৃষ্টিকর্তাদের জন্য এক অভাবনীয় উপহার।
এই মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছিল পিটাপালি এবং জামদারপালি গ্রামে। প্রথমে গানটি সামান্য পেলেও পরে হারিয়ে যায়। এখন সেই গানই ইতিহাস গড়ছে। সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে ছিঃ ছিঃ রে ননী ছিঃ।