আগরতলাঃ
রাজ্যে পা রেখেছে বর্ষার মরশুম। আর রাজ্যের ভৌগলিক অবস্থানের জন্য প্রায় সময়ই সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যহত হয় এই সময়। বর্ষাকালীন মরশুমে রাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য সহ পেট্রোপণ্য, এলপিজি সিলিন্ডার সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে সে বিষয়ে রাজ্যের খাদ্য ও জন সংভরণ দপ্তর আগাম উদ্যোগ নিয়েছে৷ বর্ষাকালীন মরশুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হলে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য কোনওভাবেই যাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি না পায় এবং অত্যাবশকীয় সামগ্রীর কালবাজারী প্রতিরোধে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর সচেষ্ট হয়েছে৷ এই বিষয়গুলো সামনে রেখে বর্ষাকালে রাজ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের যেনো অভাব না ঘটে এবং কালোবাজারীর মাধ্যমে যাতে জিনিসের দাম না বাড়ে তার আগাম প্রস্তুতি স্বরূপ আজ গোর্খাবস্তিস্থিত খাদ্য ও ভোক্তা ভবনের কনফারেন্স হলঘরে এক উচ্চস্তরি ও বৈঠকে পৌরহিত্য করেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। এদিনের বৈঠকে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে খাদ্য মন্ত্রী জানান উত্তরপূর্ব ভারতে বর্ষার দরুন আসাম -আগরতলা জাতীয় সড়কে ও রেলপথে মালবাহী ট্রেন ও যানবাহন চলাচলে মাঝেমধ্যে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে বাইরের রাজ্য থেকে আমদানি হাওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র গুলি রাজ্যে আসতে একটু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমরা আগাম প্রস্তুতি হিসেবে রাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রির বাফার স্টক বানিয়ে রেখেছি। বর্তমানে যতটুকু নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বাজারের গোডাউনে মজুদ আছে তা দিয়ে আগামী বেশ কয়েকদিন চলে যাবে। ফলে ক্রেতাদের বাজারে গিয়ে কোনরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না এবং ক্রেতারা নির্দ্বিধায় নির্বিঘ্নে চাহিদা মত জিনিসপত্র ক্রয় করতে পারবেন বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী। তিনি কালোবাজারি ব্যবসায়ীদের প্রতি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন তারা যেন সাধারণ মানুষের সাথে কোনরকম সমস্যার সৃষ্টি না করেন এবং সাধারণ মানুষরা যেন হয়রানির শিকার না হয়। খাদ্যমন্ত্রী এদিন কালোবাজারি ও মজুদদারদের প্রতি তীব্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন কোথাও কোনরূপ কৃত্রিম সংকট তৈরি করা যাবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যাঁরাই যুক্ত থাকবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে খাদ্য দপ্তর।তিনি আরও বলেন, রাজ্যে মজুদদাররা যাতে কোনভাবেই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি ঘটাতে না পারে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ সামগ্রী যাতে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকেরা তল্লাশি অভিযান ও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। মূলত, বর্ষা মরশুমে জাতীয় সড়কে বেহাল অবস্থায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে আগাম সতর্কতামুলক ব্যবস্থা হিসেবেই খাদ্য মন্ত্রী এদিনের বৈঠক করেছেন।তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় অত্যাবশকীয় সামগ্রী সহ পেট্রোল ও ডিজেল নিয়ে অযথা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। প্রায় ছয় থেকে সাত দিনের পেট্রোল ও ডিজেল মজুদ রয়েছে রাজ্যে। তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে আংশিক ক্ষতি হয়েছে বদরপুর, লামডিং রেল স্টেশনের রেললাইন। কিছু কিছু জায়গায় কাঁদা ও জল জমে গেছে। এ বিষয়ে এনএফ রেলওয়ের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি নিজে এনএফ রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছেন। আগামী দু’দিনের মধ্যে রেল পথের মাধ্যমে যোগাযোগের উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। পাশাপাশি খাদ্যশস্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ রয়েছে রাজ্যে। অযথা বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি সকলের কাছে আহ্বান জানান। আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খাদ্য জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তর এর সচিব, অধিকর্তা সহ অন্যান্য যুগ্ম অধিকর্তা/উপ-অধিকর্তা, সদর/জিরানীয়া/বিশালগড়/মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসকগণ, সাব ডিভিশনাল কন্ট্রোলার (ফুড), চিফ ইন্সপেক্টর গণ, ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এফ.সি.আই)-এর ডিভিশনাল ম্যানেজার, অল ত্রিপুরা ডিস্ট্রিবিউটার্স অ্যাসোসিয়েশন, অল ত্রিপুরা মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, পটেটো, ওনিয়ন অ্যান্ড গার্লিক মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, হোলসেল গ্রোসারিজ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, চেম্বার অফ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস, মহারাজগঞ্জ বাজার/বটতলা বাজার/লেইক চৌমুহনি বাজার/জিবি বাজার/মঠ চৌমুহনি বাজার/অভয়নগর বাজার/দূর্গা চৌমুহনি বাজার কমিটির কর্মকর্তা/প্রতিনিধি, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের অধীন পেট্রোপণ্য ও এলপিজি সরবরাহ এর সাথে সম্পৃক্ত আইওসিএল-এর আধিকারিক/ প্রতিনিধিরা।