টাকারজলাঃ
বিজেপি এবং তিপ্রা মথা দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জম্পুইজলা এবং টাকারজলা। বিজেপি কর্মীদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে জেতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে মথার বিরোদ্ধে। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। অপর দিকে বহিরাগতদের নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ উঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। হামলা পাল্টা হামলায় আহত টাকারজলা থানার ওসি রথীন্দ্র দেববর্মা সহ প্রায় কপক্ষে ১২ জন। ঘটনায় ব্যপক উত্তেজনা বিরাজ করছে গোটা এলাকায়।
ঘটনার বিবরনে জানা গেছে বিজেপি দলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল প্রদেশ সভাপতি রাজিব ভট্টাচার্যীর নেতৃত্বে জম্পুইজলা ব্লক সংলগ্ন বুকরুই কমিউনিটি হলে ১২ টাকারজলা মন্ডল কমিটির উদ্যোগে কার্যকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই অনুযায়ী কয়েকদিন যাবৎ বিজেপি দলের কর্মী সমর্থকরা টাকারজলা এবং জম্পুইজলা এলাকায় প্রচার চালিয়ে আসছিল। সোমবার কার্যকর্তা সম্মেলনে যেন বিজেপি দলের কেউ না আসতে পারে তার জন্য তিপ্রা মথা দলের অনেক কর্মী সমর্থকরা টাকারজলা এবং জম্পুইজলা সড়কে দাড়িয়ে থাকে বলে অভিযোগ। এরপরেও কিছু কিছু কর্মী সমর্থক সমস্ত ভয় ভীতি উপেক্ষা করে বুখরুই কমিউনিটি হলে প্রবেশ করে। যথারীতি বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য এবং সিপাহীজলা জেলা উত্তর অংশের সভাপতি গৌরাঙ্গ ভৌমিক সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা প্রদীপ প্রজ্জলন করে কার্যকর্তা সম্মেলন শুরু করে। কার্যকর্তা সম্মেলনে রাজীব ভট্টাচার্য বলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সংগঠনের বৈঠক সবসময় হয়। এই কার্যকর্তার সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য হলো আগামী কিছুদিন পর দেশের লোকসভা নির্বাচন। এই লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা রাজ্যের দুটি আসনেই ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদেরকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করানো। এবং নরেন্দ্র মোদিকে আবারো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী করা। বৈঠক শেষ হওয়ার পর যখন বিজেপি দলের কার্যকর্তারা হলঘর থেকে বের হওয়ার সময় মথার কর্মী সমর্থকরা বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে ধাওয়া করে টাকার জলা হরিয়াপাড়া পর্যন্ত নিয়ে যায়। কয়েকজনকে ব্যপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে বিজেপি কর্মীরাও প্রতিরোধ গড়ে তুলে। দুই দলের সংঘর্ষে সাধারন নাগরিকদের দুটি স্কুটি এবং তিনটি বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিজেপির কার্যকর্তাদের সম্মেলন বানচাল করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তিপ্রা মথা দলের কর্মী সমর্থকরা বিজেপি দলের কর্মী সমর্থকদের উপর আঘাত করা হয়েছে। এতে ৯ জন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ ।
পরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন টাকারজলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই। তিনি অভিযোগ করেন বিজেপি বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। এতে এলাকার সাধারন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। এজন্য বিজেপির ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
উভয় দলের মারপিট আটকাতে গিয়ে আহত হন টাকারজলা থানার ওসি রথীন্দ্র দেববর্মা এবং একজন পুলিশ কনস্টেবল। তাদের প্রত্যেককে টাকার জলা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে বিশাল পরিমাণ আরক্ষাকর্মীদের জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে। স্তব্ধ হয়ে যায় টাকারজলা এবং জম্পুইজলা সড়ক। হামলা এবং পাল্টা হামলায় সংবাদ লেখা পর্যন্ত উত্তপ্ত রয়েছে জম্পুইজলা এবং টাকারজলা এলাকা।