Home Uncategorized প্রস্রাবাগার এবং নেশার আস্তানায় পরিনত বালিকা বিদ্যালয়

প্রস্রাবাগার এবং নেশার আস্তানায় পরিনত বালিকা বিদ্যালয়

by News On Time Tripura
0 comment

বিশালগড়ঃ

একমাত্র বালিকা বিদ্যালয় পরিনত ব্যবসায়ীদের প্রশ্রাবখানায় । নেশাখোরদের আস্তানা বিদ্যার পীঠস্থান। প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। স্কুলের প্রবেশপথে বাজারের ডাম্পিং ষ্টেশন। বিশালগড়ের শতবছর পুরানো একমাত্র বালিকা বিদ্যালয়টি আজ অস্তিস্বের সংকটে ভুগছে। প্রশাসন এবং শিক্ষা দপ্তরের চরম গাফিলতিতে বিদ্যালয়টির স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যপকভাবে বিপর্যস্ত । বিশালগড়ের নিচেরবাজার সংলগ্ন একমাত্র বালিকা বিদ্যালয় বিশালগড় টাউন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় জর্জরিত। ১৯২৫ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়, অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিদ্যালয়ই তার শতবর্ষ উদযাপন করবে। তবে এই গৌরব উজ্জ্বল মুহুর্তে এসে বিদ্যালয়টি আজ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করছে। বিদ্যালয়টিতে নেই সম্পুর্ন বাউন্ডারী। যার ফলে প্রায় প্রতিক্ষন পার্শ্ববর্তী নিচের বাজারের দোকানি সহ পথচলতি মানুষের প্রশ্রাবের স্থান হচ্ছে বিদ্যালয়টি। ছাত্রীদের সামনেই প্রকাশ্যে এই কাজ চলছে দিনের পর দিন। কিন্তু লজ্জা বোধ তো দুরের কথা ভ্রুক্ষেপ পর্যন্ত নেই এদের। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়টির মাঠটিতে ভালভাবে নজর দিলেই পাওয়া যাবে অসংখ্য মদের বোতল আর কৌটার সন্ধান। এমনকি বহিরাগত বখাটে যুবকরা স্কুলের ছাত্রিদের উত্যক্ত করতেও পিছপা হচ্ছে না। তারই সাথে অটো এবং অন্যান্য যানবাহনের পার্কিং স্টেশন বিদ্যালয় প্রাঙ্গন। এলাকার মানুষের গবাদী পশুর অবাধ বিচরণ ভুমি। এর মধ্যেই চলছে ছাত্রীদের একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়। এইসব কারনে স্কুলের প্রতি অনীহা বাড়ছে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের। প্রতি বছরই ছাত্রী সংখ্যা কমছে বিদ্যালয়টিতে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে চলে কীর্তন আর আনন্দমেলার আয়োজন। চলতি বাংলা বছরের বৈশাখ মাসে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আনন্দমেলার আয়োজন হয়। আর মেলার আয়জনের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃক লাগানো টিনের বাউন্ডারী বেড়া কেটে ফেলে আনন্দমেলা কর্তৃপক্ষ। কথা ছিল মেলার পর বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী তারা আবার ঠিক করবেন। কিন্তু বৈশাখ পেড়িয়ে শ্রাবন চলে আসলেও বিদ্যালয়টির বাউন্ডারী এখনো ঠিক করা হয়নি। বরং এই খালি স্থান দিয়ে বাজারের সব যানবাহন স্ট্যান্ড এবং তারই সাথে বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের অঘোষিত প্রশ্রাবাগারে পরিনত করেছে বিদ্যালয়টিকে। আর এতসব যন্ত্রনা এবং লজ্জাস্কর পরিবেশে ছাত্রীদের নিয়ে বিদ্যালয় চালাচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংখ্যা মাত্র চার। বিশালগড় বিদ্যালয় পরিদর্শক, সিপাহীজলা শিক্ষা আধিকারিক থেকে শুরু করে সিপাহীজলা জেলা শাসক পর্যন্ত বিদ্যালয়টির এই বেহাল দশার কথা উল্লেক্ষ থাকলেও কেহই বিশালগড়ের একমাত্র এই বালিকা বিদ্যালয়টির অবস্থার পরিবর্তনে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ছাত্রীদের জন্য একমাত্র এই ঐতিহাসিক বিদ্যালয়টির ভবিষ্যত আজ শিক্ষা দপ্তর, প্রশাসন এবং স্থানিয় এলাকাবাসীদের তৎপরতার অভাবে সংকটের মুখে। নেই এলাকাবসীদের ভ্রুক্ষেপ, নেই শিক্ষা দপ্তরের কোন উদ্যোগ। একদিকে “বেটি বাচাও, বেটি পড়াও” স্লোগানের মাধ্যমে দেশে বালিকাদের শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলার কাজ চলছে। আর ঠিক বিপরীতে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ধ্বংসলীলা বসে বসে উপভোগ করছে শিক্ষা দপ্তর। এখন দেখার বিষয় আমাদের এই প্রতিবেদনের পর শিক্ষা দপ্তরের টনক নড়ে কিনা, নাকি এভাবেই বিদ্যলয়টিকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেবে প্রশাসন।

You may also like

Subscribe

© 2025 News On Time Tripura – All Rights Reserved. Developed by Cibato