
বিলোনিয়াঃ
হায়রে টাকা, হায়রে সম্পত্তি। টাকার মুল্য কি মায়ের থেকে বড় হতে পারে ? সম্পত্তির লোভে মৃত মায়ের মুখাগ্নি করল না কুলাঙ্গার ছেলে। যে মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে পৃথিবীর আলো দেখালো, বুকের দুধ পান করিয়ে সোহাগে আদরে বড়ো করে তুললো, সেই সন্তান আজ মৃত মায়ের মুখাগ্নি করা তো দূরের কথা, শেষবারের মতো মায়ের মুখখানি দেখার প্রয়োজন বোধ করেনি । এক বারের জন্য মায়ের জন্য মন কাঁদেনি। হিন্দু শাস্ত্রমতে বিধান আছে ছেলে সন্তানের হাতে মুখাগ্নি এবং শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় । কিন্তু ছেলে সন্তান থাকা সত্ত্বেও মুখাগ্নি পেল না অভাগী জন্মদাত্রী। ঘটনাটি ঘটে গেল বৃহস্পতিবার বিলোনিয়াতে । ঘটনাকে ঘিরে ছিঃ ছিঃ রব এলাকায় । স্বর্গীয় কিশোরী লাল সাহার স্ত্রী শোভারানী সাহা বিলোনিয়া রাজীব কর্নার এলাকায় নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন বৃহস্পতিবার সকালে।

জন্ম দিয়েছিলেন চার কন্যা সন্তান সহ এক পুত্র সন্তানের। আদর করে নাম রেখেছিলেন গৌতম। কিশোরলাল সাহা ছিলেন বিলোনিয়ার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বাবার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে জমি জামার পাশাপাশি ব্যবসাও কব্জা করে নিয়েছে পুত্র গৌতম সাহা। অর্থাৎ একমাত্র পুত্র সন্তান হওয়ার সুবাদে একাই একশ। পিতা কিশোরী লালের মৃত্যুর পর দীর্ঘ সাত বছর যাবত শয্যাশায়ী ছিলেন গৌতমের মা শোভারানী সাহা। তবে মা-ছেলে এক ছাদের তলায় থাকলেও, মার কোন যন করেনি ছেলে । মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মেয়েদের যত্নে ছিলেন শোভারানী। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যুর পর -শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব,ব্যবসায়ী মহল, আত্মীয় পরিজন সকলে উপস্থিত ছিলেন ঠিকই, তবে মায়ের মুখাগ্নি করার জন্য রাজি ছিলেন না একমাত্র পুত্র গৌতম। মায়ের মুখাগ্নির জন্য বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে আত্মীয় পরিজন, রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও ব্যাবসায়ী মহল থেকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও কিছুতেই পুত্র গৌতমের মন মায়ের জন্য গলেনি । বাধ্য হয়ে মুখাগ্নি করতে হলো মেয়ের জামাইকেই। মনুষ্যত্বহীন কুলাঙ্গার পুত্র গৌতমের এরূপ আচরণ দেখে- কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না উপস্থিত শ্মশান বন্ধু এবং আত্মীয় পরিজনরা। সমাজ এবং সভ্যতাকে বাচিয়ে রাখতে এই সকল কুলাঙ্গারদের এলাকাছাড়া এবং সামাজিকভাবে বয়কট করা অত্যাবশ্যক।