আগরতলাঃ রাজ্যে এইবার আইনজীবীদের হাতে খুন এক মুহুরী! আদালত চত্বরেই আইনজীবীদের হাতে মুহুরী খুনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মামলা যেতে পারে ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে। মানুষ কোন মামলায় জড়িয়ে গেলে আইনজীবীদের দারস্থ হয় ন্যায্য বিচারের আশায়। আর আইনের রক্ষক কতিপয় আইনজীবীদের হাতেই খুন হতে হলো আগরতলার এক লাইসেন্স প্রাপ্ত মূহুরিকে! আগরতলা জেলা ও দায়রা আদালতে অমিত আচার্য নামে লাইসেন্স প্রাপ্ত এক মুহুরী দীর্ঘদিন যাবত কাজ করছে। তবে বেশ কিছু মামলা-মোকদ্দমার বিষয় নিয়ে আদালতেরই বিভিন্ন আইনজীবীর সাথে তার ঝামেলা তৈরি হয়। যার রেস তুলতে গিয়ে গত ৫ই সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে কতিপয় আইনজীবীদের হাতে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয় অমিত। জানা যায় গত ৫ই সেপ্টেম্বর আগরতলার জেলা ও দায়রা আদালতে অমিত আচার্য নামে এক মুহুরীর সাথে কোন একটি মামলার বিষয় নিয়ে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়, এক সময় আগরতলার জেলা ও দায়রা আদালতের আইনজীবী গোপাল সিং, অনির্বাণ লোধ, রাজেশ সরকার, বিভাস দেববর্মা এবং মুহুরী শিবজিৎ বড়ুয়া, সুদীপ দেব সহ আরো বেশ কয়েকজন আইনজীবী ও মূহুরি মিলে আদালতের ভেতরে অমিত আচার্যের উপর সঙ্ঘবদ্ধ আক্রমণ শুরু করে বলে তার স্ত্রীর অভিযোগ। সিসিটিভি থেকে বাচতে, পরে তাকে লিফ্টের ভেতর ঢুকিয়েও মারাত্মক ভাবে মারা হয়। শেষে অমিত আচার্যকে টানা হেঁচড়া করে বার অ্যাসোসিয়েশনের ভেতরে নিয়েও বেধড়ক ভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ এসে আহত অমিত আচার্যকে উদ্ধার করে প্রথমে আইজিএম হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসে অমিত আচার্যের পরিবারের লোকজন। তার অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় আইজিএম হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় জিবি হাসপাতালে। জিবি হাসপাতালের চিকিৎসার পরেও অমিত আচার্যের শারীরিক অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় পরে জিবি হাসপাতালের কর্তব্যরত এর চিকিৎসকরা আহত অমিত আচার্যকে কলকাতার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করে দেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাতটা নাগাদ অমিত আচার্য মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পরে অমিত আচার্যের পরিবারের লোকজন পশ্চিম আগরতলা থানায় বেশ কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে লিখিত আকারে একটি মামলা দায়ের করে। পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ যথারীতি ৩০২,৩৪ আই পি সি ধারায় মামলা নথিভুক্ত করে। কিন্তু এতদিন হয়ে যাওয়ার পরেও পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবী এবং মুহুরিদের গ্ৰেফতার করার সাহস দেখায়নি।আদালতের ভেতরে এতবড় একটি খুনের ঘটনা ঘটে গেল অথচ অভিযুক্ত আইনজীবী ও মূহুরীরা এখনো পর্যন্ত বহাল তবিয়তে! শেষ পর্যন্ত শনিবার অমিত আচার্যের স্ত্রী আমাদের প্রতিনিধির দ্বারস্থ হয়ে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিকট আর্জি জানিয়েছেন। তবে যতটুকু খবর এই ঘটনা মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে ইতিমধ্যেই চলে গেছে এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে খুব শীঘ্রই এই মামলা চলে যেতে পারে ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে।