কদমতলাঃ বৃহস্পতিবার উত্তর জেলার সিপিআই (এম) দলের মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে পানিসাগর ও কদমতলায় পৃথক দুটি নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার।।এদিন দুপুর সাড়ে বারোটায় ৫৮ পানিসাগর বিধানসভা কেন্দ্রের বামগ্রেসের জোট প্রার্থী তথা সিপিআই (এম) দলের মনোনীত প্রার্থী শীতল দাসের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর বিকেল তিনটে নাগাদ ৫৪ কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআই (এম) দলের মনোনীত প্রার্থী ইসলাম উদ্দিনের সমর্থনে কদমতলা স্কুল মাঠে নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।পৃথক দুটি নির্বাচনী জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। তাছাড়া এদিনের পৃথক দুটি জনসভায় উপস্থিত ছিলেন,পানিসাগর কেন্দ্রের প্রার্থী শীতল দাস,কদমতলা কুর্তি কেন্দ্রের প্রার্থী ইসলাম উদ্দিন,বাগবাসা কেন্দ্রের প্রার্থী বিজীতা নাথ,জেলা সম্পাদক অমিতাভ দত্ত, প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী,কদমতলা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি করুনাময় নাথ প্রমুখ। এদিনের পৃথক দুটি জনসভার প্রধান বক্তা তথা সিপিআই দলের পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার তাঁর ঝাঁঝালো বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, বিজেপি সরকার ত্রিপুরাকে শশ্মানে পরিনত করে ফেলেছে।২০১৮ সালে বিজেপি নিজের শক্তির জোরে বামফ্রন্টকে হারায়নি।বাম বিরোধী ভোট নিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল।আর বিজেপির ৫৮ মাসের শাসনে রাজ্যে গনতন্ত্র ধ্বংস, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা হরণ সহ পবিত্র বিধানসভাকে টুটু জগন্নাথ বানিয়েছে বিজেপি সরকার। বিজেপি ও আরএসএস ২০১৪ সালের পর থেকে দিল্লিতে রয়েছে।আর সেই সময় থেকে খ্রীষ্টান ও সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের উপর ক্রমাগত আক্রমণ আনছে। তাদের খাদ্য, সামাজিকতা ও পোশাকে হস্তক্ষেপ করছে বিজেপি সরকার। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে, পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। কটাক্ষ করেন ভোটের মুখে বিজেপি দলের মাত্র চব্বিশ দফার ইস্তেহার নিয়েও। তিনি বলেন,২০১৮ সালে ২৯৯ টি মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ইস্তেহার প্রকাশ করলেও ২০২৩ এর ভোটের মুখে চুপসে মাত্র চব্বিশটি ইস্তেহার।সেই চব্বিশের অধিকাংশ কাজ বামফ্রন্ট সরকার করে গেছে। বিজেপি সরকার চাকরি ও শূন্য পদ পূরণ করতে পারেনি। উপরন্তু এই সরকার চব্বিশ হাজার চাকরির ডাক ঢোল পিটিয়ে বেড়াচ্ছে আর বাস্তবে চাকরি দিয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার। বর্তমানে রেগা শ্রমিকরা বছরে ৩২ থেকে ৩৫ দিনের কাজ পাচ্ছেন। ১০৩২৩ জন শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি, মুখের গ্রাস হরন করেছে বিজেপি। ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি চলে যাবার পর বামফ্রন্ট বিভিন্ন দপ্তরে তেরো হাজার শূন্য পদ তৈরি করেছিল। কিন্তু বিজেপি মামলা করে সেই নিয়োগ আটকে দিয়েছে। তাছাড়া রাজ্যে চলছে বিদ্যুৎ চপলতা।আর বিদুৎ এর মাশুল বৃদ্ধি করে সাধারণ জনগণের পকেট কাটছে এই সরকার। তিনি আরো বলেন, বামফ্রন্ট সরকার চার লক্ষ বাইশ হাজার সামাজিক ভাতা দিয়েছিল,আর উল্টো বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে এক লক্ষ ত্রিশ হাজারের মতো সামাজিক ভাতা কেটে দিয়েছে। এমনকি ভাতা প্রাপকরা ব্যাঙ্কে গিয়ে নিয়মিত টাকাও পাননা। তিনি বলেন, বর্তমান সিপিআই (এম) কংগ্রেস জোটে নতুন জনমুখী সরকার গঠন করে রাজ্যটাকে তার স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনবে।তাই জনমুখী সরকার গঠন করতে বামগ্রেস জোট প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান রাখেন তিনি।এদিকে এদিনের জনসভায় কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্য রেজোওয়ানা বেগম, সংখ্যালঘু মোর্চার মন্ডল সহসভাপতি আব্দুল হক সহ কুড়ি জন ভোটার বিজেপি দল ত্যাগ করে সিপিআই (এম) দলে সামিল হন। নবাগতদের দলে বরন করে নেন উপস্থিত অতিথিরা। পাশাপাশি এদিনের পৃথক দুটি বিধানসভা ছিল বামগ্রেস কর্মীদের দখলে।