ধর্মনগরঃ চাপা ক্ষোভ ও মান অভিমানের মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হল উত্তর জেলার ধর্মনগর মহকুমার চার কেন্দ্রের মনোনয়নপত্র দাখিল।বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেস,তিপ্রা মথা সহ মনোনয়নপত্র দাখিল করল নির্দল প্রার্থী।সকল প্রার্থীই ঢাক ঢোল পিটিয়ে নিজেদের মনোনয়ন পত্র জমা দেন।সোমবার ধর্মনগর মহকুমা শাসকের অফিস কার্যালয়ে ৫৪ কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি দলের প্রার্থী দিলীপ তাঁতী অতিরিক্ত মহাকুমা শাসক চন্দ্রজয় রিয়াং এর নিকট নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেন।জমা দেন এই কেন্দ্রের তৃনমূল কংগ্রেসের প্রার্থী আব্দুল হাসিম।৫৫ নং বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রর বিজেপি প্রার্থী যাদব লাল নাথ মনোনয়নপত্র জমা দেন বিধানসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা সিনিয়র ডেপুটি কালেক্টর উত্তম কুমার ভৌমিকের নিকট।এদিন এই কেন্দ্র থেকে তিপ্রা মথা দলের প্রার্থী কল্পনা সিনহা ও তৃনমূল কংগ্রেস দলের প্রার্থী বিমল নাথ তাদের মনোনয়ন পত্র জমা দেন।৫৬ ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি দলের প্রার্থী বিশ্ববন্ধু সেন তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন মহকুমা শাসক অর্গ সাহার নিকট।এদিন ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সিপিআই (এম) দলের প্রার্থী অভিজিৎ দে ও কংগ্রেস দলের প্রার্থী চয়ন ভট্টাচার্য তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাছাড়া এই কেন্দ্র থেকে ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস দলের মুখপাত্র সৌরভ গোস্বামী ক্ষোভে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।৫৭ যুবরাজ নগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী মলিনা দেবনাথ মনোনয়নপত্র জমা দেন অতিরিক্ত মহকুমা শাসক এল ডারলং এর নিকট।এই কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিজেপি দলের ওবিসি মোর্চার প্রদেশ সম্পাদক কান্তি গোপাল দেবনাথ ও তৃনমূল কংগ্রেস দলের প্রার্থী রত্নেশ্বর দেবনাথ।এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পূর্বে সকল দলের প্রার্থীরা দলীয় কর্মী সমর্থকদের চোখ ধাঁধানো মিছিল নিয়ে ধর্মনগর শহর কাঁপান।এদিন বিজেপি দলের ধর্মনগর কেন্দ্রের প্রার্থী বিশ্ববন্ধু সেনের মিছিলে পা মেলান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবও। পরিশেষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সকল প্রার্থীরা তাদের জয় নিয়ে একশো শতাংশ আশাবাদী বলে দাবি করেন।তবে এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শাসক দল তথা বিজেপি দল যে চরম চাপে ছিল তা এক প্রকার স্পষ্ট পরিলক্ষিত হয়। উল্লেখ্য,গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার বিজেপি দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর ৫৭ যুবরাজ নগর,৫৫ বাগবাসা এবং ৫৪ কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থীকে মেনে নেয়নি সদলীয় কর্মীরা। বিশেষ করে বাগবাসা বিধানসভার মন্ডল সভাপতি সুদীপ দেব ক্ষোভে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি সেরে ফেলেন।মুখ ভার করে নেন উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজল দাস, প্রদেশ কমিটির সদস্য পান্নালাল শর্মা,কিষান মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিরেন্দ্র দাস সহ অনান্যরা।সাথে যুবরাজ নগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মলিনা দেবনাথকেও মেনে নেয়নি সদলীয় কর্মীরা।তার জেরে দলত্যাগ ঘটে যুবরাজ নগরে। যদিও সোমবার প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে বাগবাসা কেন্দ্রের প্রার্থী যাদব লাল নাথ মন্ডল সভাপতি থেকে শুরু করে,জেলা সাধারণ সম্পাদক সহ ২০১৮ সালের বাগবাসা কেন্দ্রের বিজীত প্রার্থী প্রদীপ কুমার নাথকে বগল দাবা করে মনোনয়নপত্র জমা দেন।সূত্রের খবর, রবিবার মাঝ রাত পর্যন্ত যাদবলাল নাথ মন্ডল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সকল কর্মী সমর্থকদের মানভঞ্জন করান। যদিও যুবরাজ নগর কেন্দ্রে বিজেপি দলের ভাঙ্গন বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। সোমবার সকালে বিজেপি প্রদেশ কমিটির ডক্টর সেলের ইনচার্জ ডাঃ তমজিৎ নাথ উপজাতি অংশের ১০০ পরিবার নিয়ে বিজেপি দল ত্যাগ করেন।আবার এই কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রদেশ বিজেপির ওবিসি মোর্চার সম্পাদক কান্তি গোপাল দেবনাথও।তার দাবি দল সঠিক ব্যাক্তিকে মূল্যায়ন করেনি,তবে তিনি মোদি ভক্ত বলে দাবি করেন।বাকি রইলো কদমতলা কুর্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ তাঁতী।সেখানে চা শ্রমিক প্রার্থী নিয়ে প্রথমে কর্মীদের মাঝে অসন্তোষ থাকলেও রবিবার বিকেল থেকে একজোট হয়ে প্রার্থীর পাশে দাঁড়িয়ে মনোনয়নপত্র পর্ব সেরে নেন কর্মী সমর্থকরা।সাথে ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি দলের মাঝে তেমন কোন ক্ষোভ অভিমান দেখা না গেলেও প্রার্থীর সাথে দেখা যায়নি রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্নালি গোস্বামী সহ অনেক বিজেপি নেতৃত্বকে।এই কেন্দ্রে কংগ্রেস দলের প্রার্থী চয়ন ভট্টাচার্য হওয়াতে ক্ষোভে বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস দলের মুখপাত্র সৌরভ গোস্বামী নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।সব মিলিয়ে ক্ষোভ মান অভিমানের মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হল ধর্মনগর মহকুমার চার কেন্দ্রের মনোনয়নপত্র দাখিল।