কমলাসাগরঃ
এই হচ্ছে মডেল শিক্ষা ব্যবস্থার হাল। স্কুলে চলছে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের প্রি-বোর্ড অর্থাৎ টেস্ট পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীরা যখন সারা বছরের অনুশীলন শেষে হলে বসে জীবনের মুল্যবান পরীক্ষার সম্মুক্ষীন, ঠিক তখন একই বিদ্যালয়ের মাঠে লাউডস্পিকার যোগে মন্ত্রী মহোদয়া সরকারের ছাত্রছাত্রী দরদের তথ্য তুলে ধরে ভাষন রাখছেন। এই কান্ডজ্ঞানহীনতার দায়ভার কার। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় এই অনুষ্ঠানের প্রভাব পরলে তার দায়িত্ব কে নেবে ? মন্ত্রী মহোদয়া ? স্কুল কর্তৃপক্ষ ? নাকি জেলা শিক্ষা দপ্তর ? শুক্রবার ছিল দশম এবং দ্বাদশ শ্রেনীর বাংলা বিষয়ের টেস্ট পরীক্ষা। রাজ্যের অন্যান্য সমস্ত বিদ্যালয়গুলির সাথে পরীক্ষা চলছিল কমলাসাগর বিধানসভার অন্তর্গত মতিনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও । আর ঠিক পরীক্ষার দিনই স্কুলে নব নির্মিত সাইন্স লেবরেটরী এবং লাইব্রেরী উদ্বোধনের সময় ঠিক করলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কোন আক্কেলে তারা এটা করলেন তা তারাই ভাল বলতে পারবেন। আর সব থেকে অবাক করার বিষয় হল পরীক্ষা চলাকালীন ঐ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করেছেন সমাজ কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা। শুধু অংশ গ্রহন করেননি অনুষ্ঠানে রীতিমত লাউডস্পিকার লাগিয়ে জোড়াল ভাষন রাখলেন মন্ত্রী মহোদয়া। একদিকে তিনি তার বক্তব্যে তুলে ধরছেন রাজ্য সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থায় অভুতিপুর্ব উপলব্ধির কথা আর ঠিক অন্যদিকে তার এই কান্ডজ্ঞানহীনতায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল পরীক্ষায় বসা ছাত্রছাত্রীরা ।
অনুষ্ঠান চলাকালীন আমাদের প্রতিনিধির কাছে পরীক্ষা হলে ডিউটিরত এক শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং এই অনুষ্ঠনের সম্পুর্ন দায়ভার তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবচরন দেব্বর্মা এবং বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান স্বপন মিঞার উপর ছাড়লেন। তার আরও অভিযোগ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা পর্যবেক্ষক কমিটি সহ অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কোন প্রকার মিটিং ছাড়াই এই অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিব চরন দেব্বর্মা এবং বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান স্বপন মিঞার বিরুদ্ধে চরম অপদার্থতার অভিযোগ তুললেন স্থানীয় অভিভাভকরা। স্থানীয়দের অভিযোগ এটা কোন শিক্ষা ব্যবস্থার উদাহরণ। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয় চত্বরে লাউড স্পিকার লাগিয়ে অনুষ্ঠান করাই কি শিক্ষামন্ত্রীর গুনগত শিক্ষা ?
এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা সভাধিপতি অন্তরা সরকার , বিজেপি জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ ভৌমিক, কমলাসাগর বিজেপি মন্ডল সভাপতি সুবীর চৌধুরী, বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি স্বপন মিঞা । অবাক করার বিষয় হচ্ছে এদের মধ্যে কারো মনে একবারের জন্য আসেনি এদিনের এই অনুষ্ঠানটি পিছিয়ে দেওয়া প্রয়োজন ছিল। একাংশ নেতা কর্মীদের অপদার্থতা এবং কান্ডজ্ঞানহীনতার কারনে পক্ষান্তরে আজ কালিমালিপ্ত হল রাজ্য শিক্ষাদপ্তর ।