মুঙ্গিয়াকামীঃ
সভ্যতার উন্নতি ঘটেছে, ডটকমের যুগে মানুষ এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত হচ্ছে শিক্ষা,স্বাস্থ্য থেকে সমস্ত কিছু। এরপরও কিছু মানুষ আজও বঞ্চিত উন্নত সুযোগ-সুবিধা থেকে। এখনো অনেক মানুষ আছে যারা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের উন্নত করতে পারেনি, যার ফলে তারা বর্তমান যুগে অনেকটাই পিছিয়ে। আজও প্রত্যন্ত এলাকার কিছু সহজ সরল গিরিবাসীরা অসুস্থ হলে অন্ধ কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে ওঝা বৈদ্য কিংবা ঝার ফোককেই বিশ্বাস করে চলেছে। এর থেকে এগিয়ে গিয়ে বেশি হলে কোন ঔষধের দোকান কিংবা ফার্মেসি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকছে। এমন এক উদাহরণ পরিলক্ষিত হয় মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের অধীন কাকড়া ছড়া এডিসি ভিলেজের অন্তর্ভুক্ত হাজরাবাড়ি এলাকায়। এলাকাটি আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। বেশির ভাগই রিয়াং সম্প্রদায়ের জুমিয়া। এসব এলাকার সহজ সরল বাসিন্দাদের মধ্যে এই যুগেও কোন লোক অসুস্থ হলে সহজে চিকিৎসক বা চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিতে চায়না। যখন অবস্থা বেগতিক হয়ে পরে বাধ্য হয়ে কেবল ঔষধের দোকান পর্যন্তই আসে। এই এলাকারই এক বৃদ্ধ বেশ কিছুদিন যাবত রোগে ভুগছিলেন বলে খবর। জানা যায়, উনি টি.বি রোগে আক্রান্ত হয়েছেনে। যেখানে সরকারি ভাবে টি.বি রোগে আক্রান্ত মানুষের জন্য সরকার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ঔষধ সরবরাহ করছে, সেই জায়গায় কেবল মাত্র সচেতনতার অভাবে বাড়িতে থেকেই রোগের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে চলেছেন জনৈক রিয়াং বৃদ্ধ বলে জানা যায়। এলাকা সুত্রের খবর, তিনি চাকমাঘাট এলাকার কোন এক ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে নিজেকে সুস্থ করার অপেক্ষা করছেন। একমাত্র অচেতনতার কারনে এই ধরনের অসাধু ব্যাবসায়ীরা এই সহজ সরল গিরিবাসীদের বোকা বানিয়ে দি কে দিন ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। টি.বি আক্রান্ত ব্যাক্তিকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে নিজের আব্যবসা চালানোর ধান্ধায় প্রায় বিনা চিকিৎসায় বাড়িতে বসেই কাতরাতে হচ্ছে অনেক সহজ সরল গিরিবাসীদের।চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজেরাই চিকিৎসা করে চলেছে। অথচ স্বাস্থ্য দপ্তরের কোন হেলদোল নেই।
কোন কোন সময় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। অথচ তারা জানলই না তাদের পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারন কি। এই সব এলাকার মানুষের স্বার্থে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠছে যাতে করে স্থানীয় প্রশাসন যেন প্রয়োজনীয় সচেতনতার পদক্ষেপ গ্রহন করে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এলাকাটি কৃষ্ণপুর বিধান সভার অন্তর্ভুক্ত। এর পাশাপাশি উপজাতি স্ব-শাসিত এলাকার ই.এম তথা স্বাস্থ্য দপ্তরের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কমল কলই-এর নির্বাচনী এলাকা স্বভাবতই রাজ্য সরকারের জনজাতি কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী এবং এ.ডি.সি’র স্বাস্থ্য দপ্তরের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ই.এম প্রায় প্রতিনিয়তই এই সব এলাকায় বিচরণ করে থাকেন। এর পরও এ সব এলাকার মানুষ আজও সচেতন হতে পারেনি বা হয়নি। এলাকার জন প্রতিনিধিদের কাছে নিজস্ব এলাকার খবর আসেনা নাকি খবর থেকেও প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা ? এটাই সচেতন মহলের প্রশ্ন।