ধর্মনগরঃ
উত্তর ত্রিপুরা জেলার বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রর প্রিজাইডিং অফিসারকে মারপিট কান্ডে অভিযুক্ত বিজেপি জেলা সভাপতি কাজল দাসকে গ্রেফতার করতে এক প্রস্থ নাটক মঞ্চস্থ করলো কদমতলা থানার পুলিশ।যদিও বর্তমানে জামিনে মুক্ত জেলা সভাপতি।ঘটনার বিবরণে প্রকাশ,গত ২৬ শে এপ্রিল শুক্রবার রাজ্যের পূর্ব ত্রিপুরা দুই নং আসনের দ্বিতীয় দফার লোকসভা ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন সময় ৫৫ নং বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের কেন্দ্রের হুরুয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২২ নং পোলিং স্টেশনে নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত থাকা প্রিসাইডিং অফিসার নারায়ণ চক্রবর্তীকে পোলিং স্টেশনের দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের সামনেই ট্রেনে হিঁচড়ে মারপিট সহ হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল উত্তর এিপুরা জেলার বিজেপি জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য কাজল দাস সহ তার সাগরেদদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে,অভিযুক্ত কাজল দাস ঐ পোলিং স্টেশনের ভোটারই ছিলেন না।সুতরাং নির্বাচন দপ্তরের গাইডলাইন অনুসারে তিনি ঐ পোলিং স্টেশনে আসতে পারেন না।অভিযোগ ছিল প্রিসাইডিং অফিসার নাকি এক মহিলাকে ভোট দেওয়ার আগেই বলে দিয়েছিলেন তিনি ভোট দিয়ে দিয়েছেন।সেই ঘটনাটি পরদিন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হতেই আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে রাজ্য নির্বাচন দপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় কদমতলা থানায়।এবিষয়ে কদমতলা থানার ওসি জয়ন্ত দেবনাথকে জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান,ভোটের দিন ৫৫/২২ নং পোলিং স্টেশনে ভোট পর্ব চলাকালীন অবস্থায় সেখানে দায়িত্ব থাকা প্রিসাইডিং অফিসারকে শারীরিক ও মানসিক হেনস্তা করা হয়।বিষয়টি নির্বাচনী আধিকারিকদের নজরে আসার পর বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার,সেক্টর অফিসার,সিনিয়র সেক্টর অফিসার,মাইক্রো অবজারভারা,বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। তাদের দেওয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্ত জেলা সভাপতি কাজল দাস সহ অপরিচিত অন্যান্যদের বিরুদ্ধে 26/2024 KDL PS –
U/S 353/332/131/34 ipc ধারায় কদমতলা থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়।এদিকে সোমবার সকাল থেকেই অভিযুক্ত জেলা সভাপতি কাজল দাসকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া শুরু করে কদমতলা থানার পুলিশ।যদিও সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানানো তো দূরের কথা উল্টো গ্রেফতারের বিষয়টি চেপে যান থানার ওসি জয়ন্ত দেবনাথ।তাছাড়া জেলা সভাপতিকে বাঁচাতে অপর এক থানার ওসি দিনভর সম্পূর্ণ বিষয়টি তদারকি করেন বলেও সূত্রের খবর।তারপর এদিন দুপুরে ধৃত জেলা সভাপতিকে ধর্মনগর জেলা ও দায়রা আদালতে সোপর্দ করা হয়।পরে মাননীয় বিচারক জেলা সভাপতি কাজল দাসকে জামিনে মুক্তি দেন।অপরদিকে একজন জনপ্রতিনিধি এবং জেলা সভাপতির গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ায়র মত ঘটনায় গোটা উত্তর জেলা সহ সমস্ত রাজ্য জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।পাশাপাশি ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ত্রিপুরা কর্মচারী ফেডারেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।যদিও জেলা সভাপতির এমন কান্ডে বেশ চাপে পড়তে হয়েছে শাসক দল বিজেপিকে।একান্ডে দল অবশ্য এখন পর্যন্ত কোন পত্রিকায় দিতে সাহস দেখায়নি।সূত্রের খবর অনুযায়ী,বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের বিতর্কিত বিধায়ক যাদব লাল নাথের বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশনের তরফে নোটিশ জারি করা হয়েছে।এখন দেখার বিষয় নির্বাচনী কাজে কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিককে মারপিটের ঘটনায় অভিযুক্ত জেলা সভাপতি কাজল দাসের বিরুদ্ধে কতটুকু পদক্ষেপ গ্রহণ করে পুলিশ।সাথে দলীয় তরফে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাসক দল বিজেপি দল,সেই দিকেই তাকিয়ে রাজ্য বাসি।