বিশালগড়ঃ
সমকামীতা – পৃথিবীজুড়ে এই বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে যখন আওমাজ দুইভাগে বিভক্ত। তখন সারা বিশ্বের সাথে আমাদের দেশেও এই অবস্থান নিয়ে এখন স্পষ্টভাবেই সমাজের সামনে ধরা দিচ্ছে সমকামী মানুষেরা। শুধুমাত্র শহরাঞ্চলে নয় গ্রামেও এখন খোলামেলা ভাবেই এই বিষয় নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহন করতে পিছপা হচ্ছেন না তারা। সমকামীতা কোন অপরাধ নয়। ইহা সম্পূর্নভাবেই প্রাকৃতিক এবং আমাদের পোউরানিক ইতিহাসেও এই অবস্থানের উল্লেখ আছে। ত্রিপুরার প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকা থেকে আরো দুই সমকামী যুবতীর সাহসী পদক্ষেপে সমাজে এই বিষয় নিয়ে খোলামেলা মানসিক অবস্থানের জায়গা তোইরী হচ্ছে।
সমকামী প্রেমে পড়ে দুই যুবতী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ত্রিপুরা রাজ্যের এই বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল বিশালগড় মহাকুমার মধুপুর এলাকাবাসী। এলাকার অনেকেরই এই সমকামিতা শব্দটা নিয়ে ধারণা নেই। ব্রিটিশ ভারতের সমসকামী বিবাহ বিরোধী আইন ৩৭৭ ধারা ২০১৮ সালে বাতিল করে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। সমকামী সম্পর্ক বৈধতা পায়। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই বিষয়ে সাধারণের ধারন অনেকটা আধুনিক হলেও রাজ্যে সমকামীতা নিয়ে স্পষ্টতা অনেকটাই কম। তবে রাজ্যে সম্ভবত প্রথম বারের মত এই সমকামী বিবাহ ত্রিপুরার মত একটি ছোট রাজ্যেও এই বিষয় নিয়ে জন সচেতনতা তৈরি করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বিশালগড় মহকুমা অন্তর্গত মধুপুর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার তারানা নামে এক যুবতী বিশালগড়ের দিশা নামে অপর এক যুবতীর সাথে কোন না কোন বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয় । ধীরে ধীরে সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক থেকে ভালবাসার আবেগ তৈরী হয়।এবং একটা সময় এই সম্পর্কের গভীরতা এতটাই পথ অতিক্রম করে তারা নিজেদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন তবে সেই পথটা মোটেও মসৃন ছিলনা। ত্রিপুরার মত রাজ্যের একটি গ্রামের দুই যুবতীর এই সাহসী সিদ্ধান্তক্র কিভাবে মান্যতা দেবে তাদের পরিবার? দীর্ঘ তাল্বাহানা এবং চেষ্টার পর তারা তাদের সিদ্ধান্তকে বাস্তব রূপ দিতে এগিয়ে যায় এবং আদালতে নিয়ে গিয়ে কোর্ট ম্যারেজ ও পরে কোন এক মন্দিরে গিয়ে মালাবদল এবং সিঁদুর পরিয়ে দিশাকে নিজ বাড়িতে তুলে তারনা। দুই যুবতী এই কান্ড দেখে পরিবারের লোকজন সহজ স্থানীয় এলাকাবাসীরা হতবাক। তবে দুই যুবতী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পরিবার এবং সমাজ তাদের মেনে নিক বা না নিক তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। যদি সমাজ তাদের মেনে না নেয় তাহলে তারা আলাদা কোথাও গিয়ে বসবাস করবে তবুও একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারবে না। তবে এলাকায় এই বিষয় নিয়ে গুঞ্জন চলছে। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ধরনের কথা এবং সমালোচনার মাঝে বিশালগড় মহিলা থানা থেকে সুরক্ষার আর্জি জানিয়েছে দুই যুবতী। এখন দেখার বিষয় আগামী দিনে সমাজ এবং প্রশাসনের দোটানায় তাদের সম্পর্ক অটুট থাকে কিনা।