বিশালগড়ঃ
হঠাৎ করেই চাহিদা বেড়ে গেছে Maruti omni গাড়ির।
হ্যাঁ ঠিক শুনছেন। বিশালগড়ের কামথানা, ঘনিয়ামারা, অরবিন্দ নগর সহ বক্সনগরের পুটিয়া, রহিমপুর এইসব সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে হঠাৎ করেই সেকেন্ড হ্যান্ড Maruti omni গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ৪০ হাজার, ৫০ হাজার, ৭০ হাজারে বিক্রি হচ্ছে একেকটি গাড়ি।
এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগছে কেন..?
কেনই বা হঠাৎ করে পুরনো Maruti omni গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেল..? কারনটা কি..?
তাহলে এবার শুনুন, তার আসল কারণটা হচ্ছে চিনির পাচারে ক্যারিংয়ের কাজে নিযুক্ত হয়ে বাড়তি মুনাফা অর্জন। বিশালগড়ের নিচের বাজার, এসডিএম অফিস সংলগ্ন এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় শাসক দলীয় এমনকি বিরোধী যুবক থেকে বৃদ্ধ সকলেই এখন চিনির কালো বাজারিতে হাত লাগিয়ে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা অর্জনের ধান্দায় মনোনিবেশ করেছে। আর চিনির এই রমরমা ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে ক্যারিংয়ের জন্য গাড়ির চাহিদাও। বিশালগড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি ট্রাক, বোলেরও পিকআপ দিয়ে সার্ভিস দিয়েও পোষাচ্ছে না। তাই সীমান্তবর্তী এলাকার যুবকরা পুরনো Maruti omni গাড়ি কিনছে । গাড়িটি কিনে তার ভেতরের বসার সিট গুলো তুলে নিচ্ছে। আর এর ফলে একবারে ১৮ থেকে ২০ বস্তা চিনি অতি সহজেই কেরিং করা যাচ্ছে। প্রতি বস্তা ১০০ টাকা ভাড়া হিসেবে প্রতি ট্রিপে ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা ভাড়া পাচ্ছে। আর একদিনে এরকম পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রিপ দিচ্ছে প্রতিটি গাড়ি। অর্থাৎ শুধুমাত্র ক্যারিং করে দিনে 10 থেকে 12000 টাকা অর্থাৎ মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত কামাই হচ্ছে শুধুমাত্র একটি পুরনো omni গাড়ি কিনে। তাহলে এবার ভাবুন চিনির ব্যবসায়ীদের মজার পরিমাণটা কত..? কয়েক বছরে চিনির ব্যবসা করে বিশালগড়ের অনেকেই এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। পুলিশ তো দূরের কথা টাকার গরমে এখন তারা নেতা-মন্ত্রীদেরকেও পাত্তা দিতে নারাজ। আর পুলিশ কতটা অসহায় তার প্রমাণ, প্রতিটি নির্বাচনী নাকা পয়েন্টে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হলেও চিনির গাড়িগুলিকে বিনা চেকিং করেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের আদেশও এদের কাছে কলাপাতা। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরদিন ভোর ছয়টা পর্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও প্রতিরাতে হাজার হাজার গাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে টনে টনে চিনি। চিনির গাড়ির দৌড়াত্মে কামথানা, অরবিন্দনগর, ঘনিয়ামারা এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। আতঙ্কে সাধারণ মানুষ এতটাই ভীতসন্ত্রস্ত, তারা নিজেদের দুঃখ-দুর্দশার কথাও তুলে ধরতে পারছেন না মিডিয়া কিংবা নেতা বিধায়কদের কাছে। আর সব জেনেশুনেও প্রশাসন উদাসীন। পক্ষান্তরে এই কালোবাজারি ব্যবসাকে মদত দিচ্ছে প্রশাসন। সরকারও নীরব ভূমিকায়।