চড়িলামঃ
আমরার বাড়ি ঘর তুফানে ভাইঙ্গা গেছেগা। আমরা প্রায় ৬০০ পরিবার স্কুলের ক্যাম্প এ থাকি। খাওন নাই। কলা গাছ কাইট্টা লইসি, এইডি রান্না কইরা সবাই খামু। এখনও সরকারী কোনও সহযোগিতা পাইসি না। সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে ঠিক এই ভাবেই সরকার এবং প্রশাসনের বিরোদ্ধে অভিযোগ জানালেন, গত কয়েক দিনের শিলা বৃষ্টি ও ঝর তুফানে বাড়িঘর ছাড়া এক জনজাতি রমনি। গত শনি ও রবিবারের আচমকা শিলাবৃষ্টি ও ঝড় তুফানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বাড়িঘর। বিশেষ করে চরিলাম বিধানসভার অন্তর্গত ধারীয়াথল, রংমালা, রামনগর এলাকায় প্রায় কয়েকশো বাড়িঘর শিলাবৃষ্টির দরুন সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে আনুমানিক প্রায় ৬ শতাধিক পরিবারের লোকজন গৃহহীন অবস্থায় বর্তমানে। সাময়িকভাবে তারা আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে। কিন্তু তাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য তেমন কোন ব্যবস্থাপনা করা হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলে অভিযোগ। ফলে জনজাতি ভিত্তিক ওই শরণার্থী শিবিরে ক্ষুধার্ত পেটেই দিন যাপন করছে শিবিরে থাকা শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই। শিবিরে নেই শিশু খাদ্যের কোনও ব্যবস্থা। পানীয় জলেরও চরম সঙ্কট। তাছাড়া কবে নাগাদ তারা ঘরে ফিরবে তারও কোনও ঠিক ঠিকানা নেই।
এদিকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার ওই সকল শরনার্থী ক্যাম্পে ছুটে যান পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনে ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা। কথা বলেন শিবিরে থাকা জনসাধারণের সাথে। তিনি অতিসত্বর ওই সকল জনজাতি পরিবার গুলির ঘর বাড়ি মেরামত এবং পুনঃনির্মান এবং শিবিরের সব ধরনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের নিটিক দাবি জানান।
উল্লেখ্য, এই রাজ্যে বরাবরই একটা অংশের কাছে জনজাতিরা কেবল ভোট ব্যাঙ্ক। এই সহজ সরল জনজাতিদের জন্য লড়াই সংগ্রাম করতে করতে বহু নেতা রাজা, মন্ত্রী হয়ে গেছে আর অন্যদিকে জনজাতিরা সেই জঙ্গলের বাঁশ কড়ুল আর কলা গাছে খেয়ে দিন গুজরান করছে, যা এখনও বর্তমান। ফলে গত চার দিন ধরে শরনার্থী ক্যাম্পে খাদ্যাভাবে দিন কাটানো সহজ জনজাতি পরিবার গুলোর মধ্যে এক প্রকার ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেখানে ভোটের সময় সুখে-দুখে পাশে থাকার ডালাভরা আশ্বাস প্রদান করা হয় সেখানে এতদিন ধরে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ছিল ৬ শতাধিক জনগণ। যদি অতিসত্বর এই ছয় শতাধিক পরিবারের দিকে সরকার নজর না দেয় তাহলে তারা আসন্ন লোকসভা ভোট বয়কট করতে পারে বলে সূত্রের খবর।