চুরাইবাড়িঃ
সন্দেহজনক ভাবে এক চোরকে ধরতে গিয়ে একদল দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত উত্তর ত্রিপুরা জেলার চুরাইবাড়ি থানার ওসি সহ ছয় পুলিশ কর্মী। আহতদের মধ্যে ওসি ইন্সপেক্টর সমরেশ দাস,সাব ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ চৌধুরী, প্রফেশনাল সাব ইন্সপেক্টর সুদীপ জমাতিয়া, কনস্টেবল খোকন দেব,এসপিও আমিনুল হক ও এক মহিলা কনস্টেবল।একান্ডে আটক ছয় যুবক।গোটা ঘটনায় চুরাইবাড়ি জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,গত চৌদ্দ মার্চ বৃহস্পতিবার চুরাইবাড়ি থানাধীন লক্ষীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডের মনিলাল নাথের বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি কান্ড সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে স্হানীয় থানার পুলিশ চুরির মামলা হাতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে।সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার রাত একটা নাগাদ চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ লক্ষীনগর এলাকায় গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সন্দেহজনক ভাবে এক চোরকে আটক করে। কিন্তু চোরকে আটক করার সাথে সাথে ষাঠ সত্তর জনের একদল দুষ্কৃতী হাতে দা,লাঠি,রড,ভোজালি, ছুরি ,সেল্ফ ডিফেন্স স্টিক নিয়ে পুলিশের পথ আটক করে।তারপর চোর সন্দেহে আটক যুবককে পাঁচ মিনিটের জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার অন্যায় আবদার করে।তখন পুলিশ অবস্থা বেগতিক দেখে সন্দেহজনক ভাবে আটক চোরকে থানায় নিয়ে আসার পথে পর পর তিনবার পুলিশের উপর আক্রমন চালায় দুষ্কৃতিকারীরা।এমনকি দুষ্কৃতকারী দলটি বাইক নিয়ে থানায় ছুটে এসে থানার সামনেও পুলিশের সাথে খন্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয়।তাতে আক্রান্ত হন চুরাইবাড়ি থানার ওসি ইন্সপেক্টর সমরেশ দাস,সাব ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ চৌধুরী, প্রফেশনাল সাব ইন্সপেক্টর সুদীপ জমাতিয়া, কনস্টেবল খোকন দেব,এসপিও আমিনুল হক ও এক মহিলা কনস্টেবল।সাথে ঐ দলটি TR01BH/0649 নম্বরের থানার বলেরো গাড়ির পেছনের গ্লাস গুড়িয়ে দেয়।থানার সামনের এমন ঘটনা দেখে নাকা পয়েন্টে থাকা পুলিশ কর্মীরা সংঘবদ্ধ ভাবে ঐ দলটির বিরুদ্ধে রুখে দাড়ালে সকলেই বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে তাদের মধ্যে থাকা অরুপ নাথ(৩০)পিতা মৃত উপেন্দ্র নাথ, পবিত্র নাথ(৩৫) পিতা সুবোধ নাথ,দীপক গোস্বামী (২৯) পিতা কানাইলাল গোস্বামী,অজয় দেবনাথ (২৭) রসময় দেবনাথ, অনিমেষ নাথ(৩৭) পিতা অরুণ চন্দ নাথ এবং বিজিত নাথ(৩৪) পিতা বিজয় কুমার নাথ নামের পাঁচ যুবককে আটক করে পুলিশ। জানা গেছে উভয়ের বাড়ি লক্ষীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক,দুই এবং তিন নং ওয়ার্ডে।সাথে সকলের কাছ থেকে দা,লাঠি,রড,ভোজালি, ছুরি ,সেল্ফ ডিফেন্স স্টিক ইত্যাদি উদ্ধার হয়। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই চুরাইবাড়ি থানায় ছুটে আসেন ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা।আনা হয় ধর্মনগর, কদমতলা,বাগবাসা থানার পুলিশ,টিএসআর ও বিএসএফ জওয়ান। জানা গেছে,সন্দেহজনক ভাবে আটক চোর অক্ষত অবস্থায় থানার হেফাজতে রয়েছে।এমর্মে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান,ঘটনাটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারকে অবগত করবেন।তাই পুলিশ হেড কোয়ার্টার সিদ্ধান্ত নিলেই তিনি এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেবেন।উল্লেখযোগ্য যে,বিগত কয়েক মাস পূর্বে কদমতলা থানার এক কনস্টেবল ও এক এসপিওকে কর্তব্যরত অবস্থায় মারধর করেছিল অসম থেকে বনভোজনে আসা একদল মাতাল যুবক।যদিও পরবর্তীতে রাজনৈতিক চাপে তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।তাই এবারোও চুরাইবাড়ি থানার পুলিশের ক্ষেত্রেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে নাতো?প্রশ্ন বিভিন্ন মহলের।সাথে গোটা ঘটনায় চুরাইবাড়ি এলাকা জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।