বিলোনিয়াঃ
দায়সারা ভাবে উদ্বোধন অনুষ্ঠান। অগোছালো অবস্থা। অধিকাংশ চেয়ার ফাঁকা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বাজেট বরাদ্দ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে। জানালেন দপ্তরেরই এক আধিকারিক। শুক্রবার বিলোনিয়ায় দক্ষিণ জেলা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ জেলা অফিসের উদ্বোধন হয়। মন্ত্রী টিংকু রায় এই জেলা অফিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান কে কেন্দ্র করে যে চিঠি ছাপানো হয় তাতে উদ্বোধনের সময় দেয়া হয় শুক্রবার বিকেল পাঁচটায়। প্রায় ৬:০০ টা বেজে যায়। উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের চিঠিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে নাম উল্লেখ ছিল দক্ষিণ জেলা জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাকলি দাস দত্ত, দুই বিধায়ক মাইলাফ্রু মগ, স্বপ্না মজুমদার ,সমাজসেবী গৌতম সরকার দক্ষিণ জেলা শাসক। তাদের একজনও উপস্থিত ছিলেন না। স্থানীয় সাংবাদিকদের পৃথক পৃথকভাবে কোন নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা এরকম বরাদ্দ থাকলেও কার্যত এর তিন ভাগের এক ভাগ টাকা খরচ হয়েছে কিনা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানের নমুনা দেখে।
মন্ত্রীসহ পদস্থ আধিকারিকদের জন্য মিষ্টির যে প্যাকেট করা হয় তা সর্বসাকুল্যে ৫০ টাকা করে প্রতি প্যাকেট হতে পারে। এমন ৩০ প্যাকেট। অন্যদিকে উপস্থিত শ্রোতা বা সাংবাদিকদের জন্য একটি সিংগেরা ও একটি ছোট মিষ্টি এমন সব মিলিয়ে ১৫ টাকা করে ৫০ প্যাকেট যদি ধরা হয় তাহলে মিষ্টি খাতে সর্বাধিক বড়জোর চার হাজার টাকা এবং অফিস সাজানো বেলুন, গাঁদা ফুলের মালা ইত্যাদি মিলিয়ে আরও ৮ হাজার টাকা। আর অন্যান্য যাবতীয় খরচ মিলিয়ে বড়জোর ২০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে কিনা তাতেও সন্দেহ রয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিক (যেসব সাংবাদিক বিনা নিমন্ত্রণে এবং সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব কর্তব্যের তাগিদে এসেছিলেন) সংশ্লিষ্টদের কোন আপ্যায়ন নেই । স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের দপ্তরের অধিকর্তা ধনবাবুরিয়াং। এরপরেই উদ্বোধক তথা সমাজ কল্যাণ, শ্রম এবং ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বক্তব্য রাখেন। তিনি বক্তব্যের শুরুতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের নাম উল্লেখ করতে গিয়ে বিলোনিয়া পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে অনুপম চক্রবর্তীকে সম্বোধন করেন। যেখানে অনুপম চক্রবর্তী পুর পরিষদের শিক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি। মন্ত্রী বক্তব্যে বলেন রাজ্যের উন্নয়নে রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে। দক্ষিণ জেলায় অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে পরিণত হতে চলেছে। যেখানে সাবরুমে আগামীকাল মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে। তার উল্লেখ করে মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন বাংলাদেশের সাথে চিটাগাং বন্দরকে কাজে লাগিয়ে বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে উঠবে সাব্রুম মৈত্রী সেতু মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যে হাব পরিণত হয়ে উঠবে ভবিষ্যতে। রেল যোগাযোগ থেকে শুরু করে জাতীয় সড়কের রাজ্যের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। গ্রামীণ জীবিকা মিশনের মাধ্যমে মহিলাদের আত্মনির্ভর করে তোলার ক্ষেত্রে সরকার কাজ করছে ৮০ হাজারের উপরে লাখপতি দিদি আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে পেরেছে। মন্ত্রী ক্রীড়া প্রসঙ্গে বলেন জাতীয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ে রাজ্যের যেসব খেলোয়াড় বিভিন্ন পদক পেয়েছে তাদের রাজ্য সরকার পুরস্কৃত করেছে। প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তিনটি পর্যায়ে তাদের পুরস্কৃত করা হয় তিনি উল্লেখ করেন প্রথম ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা এবং তৃতীয় ক্ষেত্রে ২৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। মন্ত্রীর এই বক্তব্যে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুঞ্জন দেখা দেয়। বক্তব্য শেষে মন্ত্রীকে যখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে জানতে চান প্রথম পুরস্কারে ভূষিত যাকে এক লক্ষ টাকা করে দেয়া হয়েছে দ্বিতীয় পুরস্কার কিভাবে ৫০ লক্ষ টাকা এবং তৃতীয় পর্যায়ে ২৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। তখন মন্ত্রী স্বীকার করে বলেন এটা আসলে বলতে ভুল হয়েছে। ৫০ হাজার এবং ২৫ হাজার টাকা করে হবে।
এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিলোনিয়া ক্রীড়া অফিস প্রাঙ্গনে ছোট করে করা হয়। একটি মাত্র লাইন এবং কিছু সংখ্যক চেয়ার রেখে ছোট একটি মঞ্চ তৈরি করে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দায়সারা ভাবে সেরে ফেলা হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও বা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বাজেট বরাদ্দ ছিল অনেক বেশি। অনুষ্ঠানে চিঠিতে সিংহভাগেই আমন্ত্রিত অতিথিদের অনুপস্থিতি এবং অগোছালো উদ্বোধন অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।