চুরাইবাড়িঃ
নিউজ অন টাইমের ধারাবাহিক খবরের জেরে শেষ পর্যন্ত কদমতলা অগ্নি নির্বাপক অফিসের ভেতরের কয়েক লক্ষাধিক টাকার আগর গাছ চুরির ঘটনায় মামলা নিতে বাধ্য হল চুরাইবাড়ি থানা। আগর গাছ উধাও হওয়ার আট দিনের মাথায় মামলা নিল চুরাইবাড়ি থানা। পুলিশবাবুরা করলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন। উল্লেখ্য,গত ১৪ তারিখ রাতে কদমতলা অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের প্রেমতলাস্থিত অফিস কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির ভেতর থেকে একটি বিশাল আকৃতির আগর গাছ চুরি হয়ে যায়। পরদিন সকালে অফিস কর্মীরা তা প্রত্যক্ষ করেন এবং পরবর্তী সময় ঘটনার দুই দিন পর অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর চুরাইবাড়ি থানায় একটি লিখিত জিডি এন্ট্রি করে দায় সারেন ইনচার্জ উমেশ প্রসাদ চৌধুরী। ঘটনার সাতদিন কেটে গেলেও পুলিশ ও অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের উদ্যোগে চুরি যাওয়া আগর গাছ উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখায়নি। এদিকে অফিস সূত্রে জানা যায়,বিগত প্রায় মাস খানেক ধরে উত্তর ফুলবাড়ি এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আগর ব্যবসায়ী আব্দুল আলীর সঙ্গে ইনচার্জ উমেশ বাবুর আগর গাছ বিক্রির বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছিল। তাছাড়া একাধিকবার ওই ব্যবসায়ী গাছটি দামদর করে এবং অফিস চত্বরে এসে গাছটি দেখেও যায়। তাতে এই গাছটি আদৌ চুরি না অবৈধ ভাবে বিক্রি হয়েছে তা নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। জানা যায় ইনচার্জ উমেশ বাবুর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। তাই সরকারি যায়গা থেকে সরকারি সম্পত্তি চুরি যাওয়ার কোন তদন্তই হয়নি। এই সংবাদটি সংগ্রহ করতে গেলে অফিস কর্মীরা দাবি তুলেন,পুলিশ প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি প্রদান করুক। আগর গাছের বিষয়ে কথা বলতে গেলে আনোয়ার হোসেন নামের এক ফায়ার ম্যান এক প্রকার সংবাদ কর্মীদের উপর গোঁসা দেখান। অবশ্য স্হানীয় জনগনের অভিযোগ ,আগর গাছটি চুরি হয়নি,গাছটি বিক্রি করে চুরির রুপ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি জায়গার থেকে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা মূল্যের এই গাছটি অবৈধ ভাবে বিক্রি করেছেন ইনচার্জ উমেশ বাবু। স্হানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি তুলে ও দপ্তরের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ঘটনার আট দিনের মাথায় অর্থাৎ শুক্রবার আমাদের চ্যানেলে এই খবরের ২য় প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার পরেই নড়েচড়ে বসেন উত্তর জেলার পুলিশ আধিকারিকরা। জেলার পুলিশ আধিকারিক শীঘ্রই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেন চুরাইবাড়ি থানাকে। উপর মহলের দাবরানি খেয়ে স্হানীয় থানার পুলিশ এদিন দুপুরে দমকল অফিসের ইনচার্জ উমেশ বাবুকে থানায় ডেকে পাঠান। তারপর ভারতীয় দন্ডবিধি ৩৭৯/৩৪ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নাম্বার ৪৬, চুড়াইবাড়ি থানা। এই মামলাটি তদন্তের ভার দেওয়া হয় থানার এ এস আই কৃষ্ণধন বিশ্বাসকে। তিনি এদিন রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে। এখন প্রশ্ন হল, ঘটনার দিন রাতে ফায়ারম্যান তরুণ দত্ত, আনোয়ার হোসেন, রতন কুমার সিনহা, বিকাশ রায় এবং জগর সিনহা নামের ছয় জন ফায়ার ম্যান ডিউটিতে থাকা অবস্থায় এবং সেন্ট্রি ডিউটি থাকা অবস্থায় কিভাবে বিশাল আকৃতির আগর গাছ চুরি হয়ে গেল? স্হানীয়রা দাবি তুলছেন, পুলিশ ওই ছয় জন ফায়ার ম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে ও ইনচার্জ উমেশ বাবুর ১৪ তারিখের ফোনের কল হিস্ট্রি খতিয়ে দেখলেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে আসবে। অগ্নি নির্বাপক অফিসের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে,এই আগর গাছ চুরি কান্ডে জড়িত ইনচার্জ নিজে । তাই ইনচার্জের নামটি ভয়ে কেউ মুখে আনতে পারছেন না। তাছাড়া ওই ইনচার্জের বিরুদ্ধে প্রেমতলা দমকল অফিসের সরকারি সামগ্রী চুরি করে বিক্রি করার মতো আরো একাধিক অভিযোগ রয়েছে। যা আগামী দিনে আমরা ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করে আসল রহস্য উন্মোচন করবো।