বিলোনিয়াঃ
সাড়ে চার বছরের শিশুকন্যার লাশ কোলে নিয়ে বেরিয়ে আসছেন পিতা। হৃদয় বিদারক এই দৃশ্যে শোকাস্তব্ধ হয়ে উঠে বিলোনিয়ার নিহারনগর। পূর্বসূরীর পথে হেঁটে স্বাস্থ্যমন্ত্রক নিজের হাতেই রেখেছেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবার চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে আশাবাদী রাজ্যবাসী। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর বক্তব্যে রাজ্যকে মেডিক্যাল হাবে পরিনত করার অঙ্গীকার প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকবার। তবে উন্নয়ন আর পরিষেবা যে শুধুমাত্র বক্তব্য নির্ভর নয় তার বাস্ত চিত্র আবারও উঠে এল রাজ্যের এক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। চিকিৎসার অভাবে আরও এক শিশুমৃত্যুর অভিযোগ উঠল রাজ্যে। ঘটনা বিলোনিয়া মহকুমাধীন নিহারনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এমনই অভিযোগ উঠে এসেছে মৃত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে। এই বিষয় নিয়ে থানার দ্বারস্থ হয়েছেন মৃত শিশু কন্যার পিতা সুমন দাস। জানা যায়, সুমন দাসের সাড়ে চার বছরের শিশু কন্যা জয়শ্রী দাস গত রবিবার হঠাৎ বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে । পরিবারের পক্ষ থেকে নিহারনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় জয়শ্রীকে । কিন্তু পরিবারের অভিযোগ সঠিক পরিষেবা ছাড়া দুই দিন ধরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রেখে দেওয়া হয় জয়শ্রীকে । অবশেষে মঙ্গলবার সকালে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বিলোনীয়া মহকুমা হাসপাতালে রেফার করা হয় । কিন্তু মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছানোর পূর্বেই শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বিলোনীয়া হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষনা করে । চার বছরের শিশু কন্যার মৃত্যুর খবর শুনতেই পিতা মাতা সহ আত্মীয় স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অবুঝ এই শিশুটির মৃত্যু রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর আবারও বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে গেল। শিশুটির অবস্থা গুরুতর হলে কেন আগেই রেফার করা হলনা উন্নত হাসপাতালে। কেন খামখেয়ালি করল নিহারনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা। যেখানে এই রাজ্যের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে মহকুমা হাসপাতালগুলি শুধুমাত্রই রেফার নির্ভর, সেখানে এই শিশুটির ক্ষেত্রে কেন খামখেয়ালি করা হল। প্রশ্নগুলো থাকবে, কিন্তু চার বছরের সেই শিশুকন্যাটি আর তার মায়ের কোলে ফিরে আসবে না।