বিশালগড়ঃ
বিচারাধীন কয়েদির রহস্য মৃত্যুতে চাঞ্চল্য বিশালগড়ে। মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ হঠাৎই বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় এক আসামীকে নিয়ে আসে বিশালগড় স্থিত কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পুলিশ কর্মীরা। মহকুমা হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক আসামিকে মৃত বলে ঘোষণা করে। চিকিৎসকরা জানান হাসপাতালে আসার আগেই আসামির মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ সংশোধনাগারেই মৃত্যু হয় আসামির। চিকিৎসকের মতে আসামির মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। গত জুলাই মাসের ১৪ তারিখ রাজধানীর ক্যাম্পের বাজার নন্দিটিলায় গৃহবধূ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল স্বামী বাবুল দাস(৪৩), পিতা হরিচন্দ্র দাস। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিম মহিলা থানায় ৪৯৮ ও ৩০২ ধারায় একটি মামলা নথিভুক্ত হয় যার নম্বর ৩৪/২০২৩। অভিযুক্ত বাবুল দাসকে গ্রেফতার করে পশিম মহিলা থানার পুলিশ। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ও দায়রা আদালতের নির্দেশে বিশালগড়ের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে জেল হাজতে পাঠানো হয় বাবুল দাসকে। বিগত ৪৮ দিন যাবত আসামিকে জেল হাজতে রেখেই মামলার শুনানি চলছিল। মঙ্গলবার হঠাৎ করেই বাবুল দাসের মৃত্যুর খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সংশোধনাগার সহ বিশালগড় মহকুমা হাসপাতাল চত্ত্বরে। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জানানো হয় সিঁড়ি থেকে পড়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় মৃত্যু হয় বাবুল দাসের। তবে সংশোধনাগারের ভেতর এই রহস্য মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাবুল দাসের পরিবার পরিজনরা। বাবুল দাসের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিশালগড় ছুটে আসে তার আত্মীয়-স্বজনরা। হাসপাতাল চত্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। মৃত বাবুল দাসের ১৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পরিবারের লোক প্রশ্ন তুলেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এদিকে মৃতদেহের ময়না তদন্ত নিয়ে একপ্রস্থ তালবাহানা চলে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় বিশালগড় হাসপাতালে ময়না তদন্ত হয়নি মৃতদেহের। অন্যদিকে বিশালগড় পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃতদেহটি বিশালগড় হাসপাতালেই পড়ে থাকে। ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর অন্য কোন হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়নি। যদিও স্থানীয় মহকুমা প্রশাসন এবং বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের পক্ষ থেকে মৃতদেহটি আগরতলার জিবি হাসপাতালে নিয়ে ময়নাতদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয়। তবে বিচারাধীন অবস্থায় একজন কয়েদির এই রহস্য মৃত্যুতে বিশালগড় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বিরুদ্ধে সন্দেহের সঞ্চার হচ্ছে জনমনে। বিশালগড়ের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নেশার রমরমা এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। তার মধ্যে বিচারাধীন কয়দির এই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে নানাহ প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে সংশোধনাগারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে।