তেলিয়ামুড়াঃ
সামাজিক অবক্ষয়ের নগ্নরূপ আবারো প্রকাশ্যে। অযত্নে আর অবহেলায় অতিশয় বৃদ্ধ পিতার মৃত্যু হলেও দুই ছেলের মধ্যে একজনও বাবার শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করতে চান না, ঘটনায় তেলিয়ামুড়া নেতাজি নগর জুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়,, তেলিয়ামুড়া থানাধীন নেতাজি নগর এলাকায় রঞ্জিত তলাপাত্র নামে ৮১ বছরের বৃদ্ধ ব্যাক্তির মঙ্গলবার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে রঞ্জিত তলাপাত্র’কে উনার এক মেয়ে দেখভালে কোন ভাবে দিন কাটাচ্ছিলেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির দুই ছেলে যারা করিমগঞ্জে সুপ্রতিষ্ঠিত, ব্যাক্তিগত বিভিন্ন ঝামেলার কারণে বাবা এবং মায়ের সাথে কোন যোগাযোগই রাখতেন না।
বিগত কিছুদিন আগে রঞ্জিত বাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে এলাকাবাসীর তরফ থেকে উনার ছেলেদের’কে খবর দেওয়া হলে গুণধর ছেলে তেলিয়ামুড়াতে এসে দু-তিন দিন অবস্থান করে গেলেও পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়ে যান বাবা এবং বৃদ্ধ মায়ের কোন দায়িত্ব তারা গ্রহণ করবে না।
এলাকাবাসীর তরফ থেকে উনার মৃত্যুর পরে কুলাঙ্গার ছেলেদের বারবার তেলিয়ামুড়াতে এসে বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য অনুনয় করা হলেও মন গলেনি পাষন্ড ছেলেদের। ওই ছেলেরা নাকি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন বাবার মুখাগ্নি তারা করবে না।
এলাকাবাসীর তরফ থেকে কুলাঙ্গার ছেলেদের সামাজিক বর্জনের ডাক যেমন দেয়া হয়, পাশাপাশি কুলাঙ্গার আখ্যায়িত করে আগামী দিনে বাবা-মায়ের সমস্ত ধরনের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার আহ্বান করা হয়।
এদিকে যে মেয়ে এতদিন দীর্ঘ কায়ক্লেশে বাবা এবং মাকে দেখে চলেছেন তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে,, রুদ্ধ হয়ে যাওয়া কন্ঠে বারবার যেন বলতে চাইছিলেন তার ভাইয়েরা এরকম আচরণ করবে, সমাজের বুকে এরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে তা সে কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি। জানা গেছে, রঞ্জিত তলাপাত্রের মৃতদেহ এখনো বাড়িতেই রয়ে গেছে, ধর্মনগর থেকে উনার ছোট ভাই এসে মুখাগ্নি করবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মৃত রঞ্জিত তলাপাত্রের দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে রয়েছে।
যদিও এই ঘটনার খবর পেয়ে মৃত ব্যাক্তির বাড়িতে যান তেলিয়ামুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়িকা তথা রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায়।