Home BREAKING NEWS চরম সংকটে ধুঁকছে বাবা গোরক্ষনাথ গো-শালা, সরকারি সাহায্যের আর্জি গোরক্ষনাথ সংস্থার

চরম সংকটে ধুঁকছে বাবা গোরক্ষনাথ গো-শালা, সরকারি সাহায্যের আর্জি গোরক্ষনাথ সংস্থার

by News On Time Tripura
0 comment

ধর্মনগর:

চরম সংকটে ধুঁকছে বাবা গোরক্ষনাথ গো শালা। গবাদিপশু পাচার রোধ করতে বিএসএফ ও পুলিশকে সাহায্য করতে উত্তর ত্রিপুরা জেলার যুবরাজ নগর বিধানসভা কেন্দ্রের রাজনগর গ্রামে ২০১৯ সালে বাবা গোরক্ষনাথ সংস্থা “বাবা গোরক্ষনাথ গো শালা”স্হাপিত করে। শুরু থেকে আজ অবধি সংস্থার সদস্যরা অনেক প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে গো শালা টি চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে এই গো শালা গোরক্ষনাথ সংস্থার সদস্য কান্তি গোপাল দেবনাথ পরিচালনা করে আসছেন।এক সাক্ষাৎকারে গো শালার পরিচালক কান্তি গোপাল দেবনাথ জানান,২০১৯ সালে গোরক্ষনাথ গো শালা পথচলা শুরু করে। মূলত গরু পাচার রোধ করতে তাঁর এই প্রয়াস। কেননা, ত্রিপুরা রাজ্যে সরকারিভাবে কোন গো শালা নেই। গোটা রাজ্যে সংস্হার আওতাধীন গো শালা রয়েছে মাত্র দুটি। তারমধ্যে গোরক্ষনাথ গো শালা একটি। তাঁর মতে পাচারের পথে নিয়ে যাওয়া গরু বিএসএফ অথবা পুলিশ আটক করলে তা কার কাছে সমঝে দেবে‌।রাখার অভাবে হয়তোবা গরু পাচার লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাবে।সেই কথা চিন্তা করেই এই গো শালা স্হাপন। উত্তর, ঊনকোটি ও ধলাই জেলায় যেসকল গরু বিএসএফ ও পুলিশ আটক করে তা এই গো শালায় নিয়ে আসা হয়। তারপর তিনি তাঁর পকেটের টাকা খরচ করে ঐ গরু গুলিকে লালন পালন করেন।আজ পর্যন্ত তাদেরকে সরকারি কিংবা বেসরকারি ভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা করা হয় নি। এমনকি রাজ্য সরকারের হাজার হাজার খানি গোচর ভূমি থাকলেও গোরক্ষনাথ গো শালা বছরে চল্লিশ হাজার টাকার বিনিময়ে কুড়ি খানি জায়গা ভাড়া নিয়ে গো শালা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান,গত মাসের ২৮ তারিখ ১০৫ নং বিএসএফ ব্যাটালিয়নের একটি দল ত্রিপুরার ধলাই জেলার মাছলি বাজার এলাকায় ওৎপেতে বসে ১৮টি গরু বোঝাই ডিআই ও বলেরো গাড়ি আটক করে।সাথে গবাদি পশু অবৈধ পরিবহনে জড়িত আঠারো জনকে আটক করে বিএসএফ।পরে গাড়িগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে মোট ৮৬ টি বার্মিজ গরু উদ্ধার করে বিএসএফ।

৮৬ টির মধ্যে ৩ টি গরু ঘটনাস্থলেই মারা গেছে এবং তিনটি গরু মর্মান্তিক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। উদ্ধারকৃত বার্মিজ গরুর আনুমানিক বাজার মূল্য নয় কোটি টাকার বেশি।৩ টি গরুর মৃত্যুর কারন হিসেবে বিএসএফ জানিয়েছে,গাড়িতে অধিক সংখ্যায় গরু বোঝাই ও তীব্র গতির কারনে।পরে সবকটি গরুকেই গোরক্ষনাথ গো শালায় পাঠানো হয়। অনুরুপ ৩০ মে দামছড়া থানার পুলিশ পাচারের পথে ১২ টি বার্মিজ গরু আটক করে গোরক্ষনাথ গো শালায় পাঠায়। বর্তমানে অধিকাংশ গরুগুলির চিকিৎসা চলছে। নিজের পকেটের টাকায় পশু খাদ্য থেকে শুরু করে করাচ্ছেন চিকিৎসা।অবশ্য গোশালা কতৃপক্ষের অনুরোধে ভেটেনারি চিকিৎসকরা গো শালা পরিদর্শন করেন এবং আহত গরুগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। তিনি অত্যন্ত দুঃখের সহিত জানান, মিনি ট্রাকে খুব জরাজীর্ণ অবস্থায় গরু নিয়ে যাওয়ায় তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বেশ কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত পরিচর্যার প্রয়োজন রয়েছে। ভেটনারি ডাক্তারদের দ্বারা নির্ধারিত ওষুধগুলি সরকারিভাবে পাওয়া যাচ্ছে না।ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে এর জন্য অনেক খরচ।ঔষধ ও পশু খাদ্য সহ গরুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দৈনিক গড়ে তেইশ হাজার টাকার বেশি খরচ হচ্ছে।দায়িত্বশীল নাগরিক পশু খাদ্য বা গবাদি পশুর যত্ন নেওয়ার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার অনুরোধ জানান। তিনি আরো জানান,বিশাল মাত্রায় বার্মিজ গরুর খাবার যোগাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি গবাদিপশু রক্ষার জন্য সর্বত্র ছুটছেন। বছরের পর বছর ধরে তার নিরন্তর প্রচেষ্টায় এধরনের জব্দ করা প্রায় সাড়ে চারশো গবাদিপশু যথাযথ পরিচর্যার আওতায় রয়েছে।গত ঈদ থেকে বার্মিজ বার্মিজ গরু পাচার বেড়েই চলেছে।পুলিশ ও বিএসএফ অবৈধ গরু আটক করছে ঠিকি কিন্তু আটকের পর গরু গুলি কোথায় রাখা হচ্ছে,কেমন থাকছে, কিভাবে তাদের লালনপালন হচ্ছে?সেই খবর আর কেউ রাখে না। এমনকি আদালত কর্তৃক মালিকের পরিচয় সন্তুষ্ট হলে পাচারকার্যে জড়িতদের কাছে থেকে নূন্যতম ফি নিয়ে গবাদি পশু ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হচ্ছে। আদালত আটক করা গবাদি পশুর ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেখেই রিলিজ করে দিচ্ছে।তাই বাবা গোরক্ষনাথ গো শালা জিইয়ে রাখতে সরকারি সাহায্যের কাতর আর্জি জানিয়েছেন গো শালার পরিচালক কান্তি গোপাল দেবনাথ।

You may also like

Subscribe

© 2025 News On Time Tripura – All Rights Reserved. Developed by Cibato