বিশালগড়ঃ
দুর্ঘটনায় প্রাণ যাওয়া মৃতদেহ নিয়ে দমকল কর্মী, পুলিশ এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে ঠেলাঠেলি। তিন দপ্তরের দায়িত্ব ভাগাভাগির জেরে প্রায় আধ ঘন্টা দমকলের গাড়িতে পরে রইলো মৃতদেহ। ঘটনা বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে বিশালগড় জাঙ্গালিয়া স্কুলের সামনে ডি আই গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় উত্তর চড়িলাম গৌতম কলোনি এলাকার চন্দন দেবনাথে।TR07F5605 নম্বরের স্কুটি নিয়ে বিশালগড় থেকে চড়িলামে যাওয়ার পথে চন্দন দেবনাথের স্কুটিকে উল্টো দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি ডি আই গাড়ি স্বজোড়ে ধাক্কা মারে। এতে চন্দন দেবনাথের মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লাগায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। দুর্ঘটনার পর ঘাতক গাড়িটি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বিশালগড়ের দমকল কর্মীরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দমকল কর্মীরা জানায় তাদের আইন অনুসারে মৃতদেহ নিয়ে আসার মত কোন নিয়ম নেই। পরে আগরতলা সাব্রুম জাতীয় সড়কের যানজটের কথা চিন্তা করে বিশালগড় অগ্নি নির্বাপক দপ্তরে কর্মীরা মৃতদেহ বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে। তারপর শুরু হয় মৃতদেহ নিয়ে তিন দপ্তরের মধ্যে ঠেলাঠেলি। কেউই অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের গাড়ি থেকে মৃতদেহ নামিয়ে হাসপাতালে ঢুকাতে নারাজ। যার ফলে দমকল কর্মীরা বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহ নিয়ে আসার প্রায় আধঘন্টা যাবত মৃতদেহ অগ্নি নির্বাপক দপ্তরে গাড়িতেই পড়ে থাকে। স্বাস্থ্য কর্মী, দমকল কর্মী এবং পুলিশ কর্মীদের মধ্যে একে অপরের দায়িত্ব নিয়ে চলে বাকবিতণ্ডা। পরে মৃতের পরিবারের কর্মীরা হাসপাতালে এসে অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের গাড়ি থেকে মৃতদেহ নামিয়ে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
রাজ্য সরকারের তিন গুরুত্বপূর্ন দপ্তরের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে ঠেলাঠেলি দেখে হতবাক সাধারণ মানুষ। মৃতদেহকে নিয়ে যে এত নিয়ম নির্দেশিকা রয়েছে তা সাধারণ মানুষ কোন ভাবেই জানতো না। কারণ কিছুদিন আগে বিশালগড় থানা এলাকার বাইরে মধুপুর থানার এলাকার এক গ্রাম্য মেলার জুয়ার আসর থেকে টাকা আনতে গিয়ে জুয়ারিদের হাতে বিশালগড় থানার দুই এসপিও জওয়ানের মার খাওয়া, দুঘটনায় আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসকের আগে দমকল কর্মীদের দ্বারা মৃত্যুর ঘোষণা দিয়ে দেওয়া এবং কতিপয় স্বাস্থ্য কর্মীদের দ্বারা হাসপাতালের অভ্যন্তরে অবৈধ গর্ভপাত করানোও কিন্তু নিজেদের দায়িত্ব বহির্ভূত কাজ। এখন প্রশ্ন উঠছে তিন দপ্তরের কর্মীরা যদি অন্যান্য ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারে তাহলে কি মানবতার খাতিরেও একটা মৃতদেহকে গাড়ি থেকে নামানো সম্ভব ছিল না? নাকি শুধুমাত্র নিজেদের যেখানে ফায়দা সেখানেই দায়িত্ব পালন করা এই সরকারি কর্মীদের কাজ?