কৈলাশহরঃ
রাজ্যের বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নিউজের জেরে পাহাড় প্রমান প্রতিকূলতা কাটিয়ে তুলতে কৈলাসহরের বধ্য গ্রামের লক্ষণকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়। এবং মন্ত্রী টিংকু রায় ত্রিপুরা রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমকে ধন্যবাদও জানালেন।
উল্লেখ্য, পড়াশোনার মাধ্যমে দারিদ্রসীমার নিচে বাস করা লক্ষণ চেয়েছিলো আগামী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে আর তার এই লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী টিংকু রায়। চলতি মাসের দশ মে কৈলাসহর শহরের কোলাহল থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে চন্ডীপুর বিধানসভার অন্তর্গত দেওরাছড়া ভিলেজের কলাছড়া গ্রামের লক্ষণ উরাং ও তার নানীর জীবন যুদ্ধের কথা প্রকাশ হয়েছিলো। সেই জীবন যুদ্ধের গল্পের নিউজ দেখে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন রাজ্যের যুব ক্রীড়া ও সমাজ কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়। একসময় মন্ত্রীর নির্দেশে সমস্ত আধিকারিকের দৌড় ঝাপের পর এবং মহকুমা শাসক প্রদীপ সরকারের সহযোগীতায় লক্ষণ ও তার নানীর রেশন কার্ড,আধার কার্ড এবং লক্ষণের তপশিলি উপজাতি সার্টিফিকেট একদিনের মধ্যেই তৈরী হয়ে যায়। তবে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যেতে এবং পড়াশোনা চালানোর জন্য জন্য প্রতিমাসে একটা আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন ছিলো লক্ষণের, আর সেই লক্ষকে পূরণ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী টিংকু রায়। লক্ষণ যাতে তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য লক্ষণকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের একটি স্কিমের মাধ্যমে প্রতিমাসে চার হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দেন। এছাড়াও আগামী মাসের মধ্যেই লক্ষণ উরাং-এর নানীর বৃদ্ধ ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। দশ মে সংবাদ প্রকাশের পর মাত্র দশ দিনের মধ্যে কুড়ি মে শনিবার দুপুরে মন্ত্রী টিংকু রায় লক্ষ্মণ উরাং-এর বাড়িতে গিয়ে সব কাগজ পত্র তোলে দেন এবং লক্ষনের বাড়িতে গিয়ে সমস্ত কিছুর খোজ খবর নেন। মন্ত্রী টিংকু রায়ের এধরনের পদক্ষেপে দেওড়াছড়া এডিসি ভিলেজের সাধারণ মানুষেরা খুবই খুশি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের দেওরাছড়া ভিলেজের অন্তর্গত কলাছড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা লক্ষণ উরাং, যার জন্ম পয়লা জানুয়ারী ২০১০। পিতা রাজেশ উরাং এবং মা বাঁধিনি উরাং। কিন্তু লক্ষণের বয়স যখন প্রায় ৭ কিংবা ৮ মাস হবে হঠাৎই লক্ষণকে ছেড়ে চিরতরে তারার দেশে চলে যান ওর মা। লক্ষণের মায়ের চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দিবারাত্র শুধু উনার চিন্তায় একসময় প্রচন্ড অসুস্থতা ও স্রীর ভাবনায় আবেগপ্রবণ হয়ে নিজেকে শেষ করে দেন লক্ষণের পিতা। তারপর থেকেই নানীর কোলেপিঠে করেই ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা লক্ষণের। বৃদ্ধা নানী লক্ষণকে কোলেপিঠে করে মানুষ করতে করতে কখনযে সে পুরো সংসারের দায়িত্বটা নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছে সেটা লক্ষণের ঠিক মনে নেই। বর্তমানে লক্ষণের বয়স প্রায় ১৪ বৎসর। চন্ডিপুর বিধানসভার অন্তর্গত কলাছড়া স্কুলের সে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। প্রায়সই সে স্কুলে আসে না খেয়ে, লক্ষ্য একটাই পড়তে চায়। আর লক্ষণের এই অদম্য ইচ্ছের গল্প রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হতেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সাহায্য এত দ্রুত লক্ষণের ঘরে পৌঁছে যাবে সেটা লক্ষ্মণ নিজেও ভাবতে পারেনি। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষণের কাছে এসে পৌঁছলো সাহায্যের হাত। আগামী দিনে যাতে লক্ষণ তার পাহাড় প্রমাণ প্রতিকূলতা কাটিয়ে এগিয়ে যায় সেই শুভেচ্ছা রইলো সংবাদ মাধ্যমের তরফ থেকেও।