উত্তরজেলাঃ আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভা ভোট।তাই নির্বাচনী প্রচারে শাসক বিরোধী সবকটি রাজনৈতিক দল। শনিবার দুটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে উত্তর জেলায় আসেন সিপিআই (এম) দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী।এদিন দুপুর বারোটায় পানিসাগর বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআই (এম) মনোনীত প্রার্থী শীতল দাসের সমর্থনে দামছড়া বাজার শেডে নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী।সাথে ছিলেন উত্তর জেলা সম্পাদক অমিতাভ দত্ত,প্রার্থী শীতল দাস সহ মহকুমা নেতৃত্বরা।এই নির্বাচনী জনসভায় প্রধান বক্তা তথা দলের রাজ্য সম্পাদক দলীয় প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান।সেখানে জনসভা শেষে চলে আসেন ধর্মনগর মহকুমার বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের নতুন বাজার এলাকায়।সেখানে বাগবাসা বিধানসভার সিপিআই (এম) মনোনীত প্রার্থী বিজীতা নাথের সমর্থনে অপর একটি নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন রাজ্য সম্পাদক।সেখানেও দলের মনোনীত প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার আহ্বান রাখেন।এই নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক অমিতাভ দত্ত, মহকুমা সম্পাদক অভিজিৎ দে,প্রার্থী বিজীতা নাথ সহ অনান্যরা। এদিনের পৃথক দুটি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান বক্তা তথা সিপিআই (এম) দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন,রাজ্যে বিজেপি নামক একটা ঝুমলা সরকার চলছে।ভিশন ডকুমেন্টের ২৯৯ টি প্রতিশ্রুতির একটিও পূরন করেনি।চাইলে ২৯৯ টি প্রতিশ্রুতির দুই,চার আনা তো পূরন করা যেতো।সেই দল আবার দাবি করছে শরিক দল আইপিএফটিকে নিয়ে ৪৪ টি আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাবে ক্ষমতায় আসছে। ২০১৮ সালে বিজেপি ক্ষমতায় বসার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যকে মডেল রাজ্য বানাবেন বলেছিলেন।এখন তিনি নিজেই মডেল হয়ে গেছেন। তিনি আবার গোমতী নদী দিয়ে রাজ্যে জাহাজ নিয়ে এসেছিলেন। রুদ্র সাগরে হাঁসের ছানা ছেড়ে অক্সিজেন তৈরি করেছিলেন। ত্রিপুরা বিজেপিকে ভোটের বাজারে উদ্ধার করতে RSS ও বিজেপি নামক কুড়ি হাজার লোক ঢুকেছে এ রাজ্যে। বিজেপি দলের স্লোগান,সবকা সাথ সবকা বিকাশের নামে জনগনের বিকাশ না হলেও দলের একাংশ নেতা নেত্রী আঙ্গুল ফুলে বটগাছ হয়েছেন।বিজেপি দলের বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও শুধু স্লোগান মাত্র।আর বাস্তবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের বিধানসভা কেন্দ্রে একটি মেয়েকে জীবন্ত পুড়ে মারা হয়েছিল। তিনি তাঁর বক্তব্যে ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের নাম ধরে বলেন,বিশ্ব বন্ধু অনেক যাত্রাপালা করেছেন তাই সিপিআই (এম) সরকারের শাসনে ধর্মনগরে রেল ডিভিশন,সেন্ট্রাল স্কুল সহ অনান্য দাবি নিয়ে বিধানসভায় অভিনয় দেখিয়ে অনেক নাচানাচি করতেন। কখনো কখনো টেবিলের উপর উঠে যেতেন। কিন্তু বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর কোথায় গেল তাঁর এত প্রতিবাদী চিৎকার চেঁচামেচি।বিগত পাঁচ বছরে বানিজ্য নগরী ধর্মনগর মাফিয়াদের স্বর্গ রাজ্যে তৈরি হয়েছে। সংস্কৃতির শহরকে অপসংস্কৃতিতে রুপ নিয়েছে। তিনি বলেন,এই বিধানসভা নির্বাচন সংবিধান ও গনতান্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে।তাই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাথে আসন সমঝোতা করেছে সিপিআই (এম)। তিনি বলেন,আসন সমঝোতা হয়েছে শুধু, কিন্তু কর্মসূচি গত পার্থক্য রয়েছে ও থাকবে।এদিন তিনি তিপ্রা মথা প্রসঙ্গে বলেন,তিপ্রা মথা মহাজোটে না আসলেও তাদের সাথে ভোট ভাগাভাগিতে আলোচনা চালাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন,শাসক বিজেপিকে সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসবেন। পাশাপাশি তিনি আশাবাদি, উত্তর জেলা থেকে সিপিআই (এম) দল রেকর্ড সংখ্যক আসনে জয় ছিনিয়ে নেবে। এদিকে এদিনের নতুন বাজার এলাকার নির্বাচনী জনসভায় বিজেপি দল ছেড়ে ৯ পরিবারের ৪০ জন ভোটার এবং তৃনমূল কংগ্রেসের ২ জন ভোটার লাল ঝান্ডায় সামিল হন বলে সিপিআই (এম) দলের নেতৃত্বের দাবি। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে দলে বরন করে নেন রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী সহ অন্যান্য অতিথিরা। অপরদিকে এদিনের পৃথক দুটি নির্বাচনী জনসভায় লাল স্রোতে ভাসছিল দামছড়া ও নতুন বাজার এলাকা।