কৃষ্ণপুরঃ
(তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি)
এই সময়ের মধ্যে তেলিয়ামুড়া মহকুমার অন্তর্গত কৃষ্ণপুর বিধানসভার নোনাছড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। যদিও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বা তেলিয়ামুড়া মহকুমা স্বাস্থ্য দপ্তরের ভূমিকায় আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিন্তু এরপরেও আতঙ্ক বিরাজমান। কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন জনজাতি এলাকাগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা নতুন কোন বিষয় নয়।আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা বারবার দাবি করেন রাজ্য সরকার শহর থেকে গ্রাম পাহাড় সবটাই স্বাস্থ্য পরিষেবা গত মানের উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছে, তবে শহর আগরতলার বাইরে এমন কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার ছিটেফোঁটা দেখা যায় না, এর পাশাপাশি এমন কিছু কিছু জনপ্রতিনিধি রয়েছে যারা এলাকার মৌলিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিক রয়েছে কিনা দেখার ব্যাপারে উদাসীন। এর ফলে যা হবার তাই হচ্ছে, সরকারি কোষাগারের লক্ষ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার নামে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন আঙ্গিকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র আরোগ্য মন্দির নির্মাণ করা হচ্ছে কিন্তু চিকিৎসক বা চিকিৎসা কর্মীরা চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার বদলে বাড়িতে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। এরকমই এক ঘটনা রাজ্যের এই মুহূর্তে সবচেয়ে মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার নির্বাচনী কেন্দ্রের অন্তর্গত নোনাছড়াতে। এই এলাকাতে আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির বা স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে, কাগজে কলমে স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে, কিন্তু এলাকাবাসীদের অভিযোগ হচ্ছে, গোটা মাসের মধ্যে মাত্র দুই দিন সেন্টার খোলা হয়। ভাবা যায়? মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকার দাবি করছে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সরকার আন্তরিক, আর খোদ কেবিনেট মন্ত্রী বিকাশের এলাকাতে স্বাস্থ্য পরিষেবার বিনাশ হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে নোনাছড়া এমন একটা এলাকা যেখানে ম্যালেরিয়া আতঙ্কের অপর নাম হিসেবে উঠে আসছে। তারপরেও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তালা খুলছে না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সমর্থনযোগ্য না হলেও প্রশংসনীয় কাজ করছে আশা কর্মীরা, উপযুক্ত এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকলেও গোটা এলাকার চিকিৎসা পরিষেবার জন্য এখন সাধারণ মানুষের ভরসা একমাত্র আশাকর্মী।অর্থাৎ এই প্রতিবেদনের সারমর্ম হচ্ছে রাজ্যের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার জনজাতি দরদ এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যার দৌলতে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে সাধারণ মানুষ শুধু বঞ্চিত হচ্ছে তা নয়, দিনের পর দিন স্বাস্থ্য কেন্দ্র তালা বন্ধ থাকছে আর মন্ত্রী দিল্লি হিল্লি করছেন।এমন ঘটনা, কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের শিক্ষা স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে পানীয় জল সব ব্যাপারেই সমস্যা তৈরি হয়ে আছে, কিছু কিছু চেলা-চামুন্ডা বেষ্টিত মন্ত্রী আদতে কৃষ্ণপুর নিয়ে ভাববেন কিনা তা বলা মুশকিল, তবে জনজাতি দপ্তরের মন্ত্রী হয়ে জনজাতি অধ্যুষিত কৃষ্ণপুরের সাধারণ মানুষের প্রয়োজন এবং চাহিদাকে মন্ত্রী বিকাশ যেভাবে পদদলিত করে চলেছেন তা গোটা রাজ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে চলেছে।